বছর দেড়েক আগে আগে বিয়ে হয়েছিল চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জান্নাতুন নাঈম নিশুর (২০)। ৬ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে তার। বর্তমানে স্বামী থাকেন বিদেশে।
শনিবার ওই সন্তানকে দুধ খাওয়াতে গিয়ে নিশু হৃদরোগে আক্রান্ত (স্ট্রোক) হয়ে মারা গেছে বলে দাবি করেছেন তার শ্বশুর-শাশুড়ি। তবে নিহতের পরিবারের দাবি তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের পরই বোঝা যাবে, এটা কি হত্যা না আত্মহত্যা।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হাটহাজারী পৌরসভার বাসস্টেশনস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানা পুলিশ নিহত গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
নিহত নিশু হাটহাজারী পৌর এলাকার ৬নং ফটিকা ওয়ার্ডের মেহেদী পাড়া এলাকার দুলা মিয়া সওদাগর বাড়ির দুবাই প্রবাসী মো. ফোরকান মেহেদীর স্ত্রী ও রাউজান উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের আমিনুল খলিপার বাড়ির মো. সোলায়মানের কন্যা।
নিহতের স্বজনদের দাবি, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে নিশুর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন। গত রোজার মাসেও এ নিয়ে সালিশও হয়েছে। তবে সেটা ঠিক নয় নিশুকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
এদিকে নিহতের শ্বশুর মো. ফারুক আহাম্মদ (৬০) বলেন, নিশুর ওপর কোনো নির্যাতন চালানো হয়নি। সে তার শিশুকে দুধ খাওয়াতে গিয়ে স্ট্রোক করেছে। পরে তাকে নিয়ে আমরা প্রথমে বাড়ির পাশে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিয়ে যাই। সেখান থেকে বাসস্টেশনস্থ আলিফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. চৌধুরী মো. ইমতিয়াজ সুলতান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, এ সময় নিহত নিশুর আত্মীয়-স্বজনরা হাসপাতালে আমার ওপর চড়াও হয় এবং এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আমাকে রক্তাক্ত জখম করে।
ঘটনার খবর পেয়ে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুল্লাহ আল মাসুম ও মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দীন জাহাংগীর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ সময় নিশুর লাশ উদ্ধার করে ও তার শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এএসপি আবদুল্লাহ আল মাসুম জানান, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহতের শ্বশুর ফারুককে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, গৃহবধূ নিশুকে হত্যা করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পরই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
-যুগান্তর