অযত্ন-অবহেলায় ঝিকরগাছার স্বাস্থ্য সেবা ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

যশোর ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের উলাকোল গ্রামের একমাত্র স্বাস্থ্য সেবা ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি পড়ে আছে অযত্ন অবহেলায়।ডাক্তার নেই,ঔষধ নেই,নেই স্বাস্থ্য সেবার কোনচিহ্ন।ফলে দিনে দিনে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি স্থানীয় মাদক সেবীদের দখলে চলে গেছে।নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর রোগীর উপস্থিতি না থাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে গড়ে উঠেছে বিষধর সাপ বিচ্ছু ও পোকামাড়ের আবাসস্থল।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়,১৯৯৯ সালের ৩০ অক্টোবর উপজেলার উলাকোল বাজার সংলগ্নে তৈরী করা হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি।হাতের নাগালে সব ধরনের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খুশি ছিলো এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।কয়েক বছর সঠিক নিয়মে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চললেও পরবর্তীতে ধীরে ধীরে অচল হতে থাকে এই সেবা কেন্দ্রটি।হঠাৎই ডাক্তার সংকট,ঔষধ সংকট সহ নানান রকম স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যম গুলো সংকটে পড়তে থাকে।

সেই আগের মতো চিকিৎসা সংকটে পড়ে এই এলাকার মানুষ। জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে তাদেরকে যেতে হয় দুর দূরান্তের কোন হাসপাতাল বা সেবা কেন্দ্রে। চরম দুর্ভোগ নেমে আসে এখানকার সুবিধা বঞ্চিত গ্রামবাসীর।চালুরত স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা সেবা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ায় আজ তা ভাঙ্গাচোরা মাংস বিহীন কংকালের মতো দাঁড়িয়ে আছে।ফলে স্থানীয় মাদক সেবীরা আড্ডা দেয় এখানে। পাশাপাশি অপরিস্কার নোংরা পরিবেশের সুবিধা নিয়ে আবাসস্থল গড়ে তুলেছে বিষধর সাপ বিচ্ছুরা।

ডাক্তারের কক্ষ আছে নেই ডাক্তারের আসা যাওয়া।আছে অপারেশন থিয়েটার যা ধুলা ময়লার স্তুপে চাপা পড়ে আছে ডাক্তার এবং ঔষধ সংকটের সময় থেকে।একটি মাত্র আর্সেনিক যুক্ত নলকুপ আছে যা এখনো বেকার দাঁড়িয়ে আছে।সার্বক্ষণিক একজন ফ্যামিলি প্লানিং ইন্সপেক্টর আছে বর্তমান তিনিও বসতে পারেন না তার কক্ষে।রুম খুলতেই বিষধর সাপেদের ভয়ংকর আনাগোনা ও তাদের অবাধ্য উপস্থিতি থমকে দেয় তার জীবন যাত্রা।

সপ্তাহে দুই জন করে ডাক্তার মাঝে মাঝে আসলেও স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের জরাজীর্ণ অবস্থা,ঔষধ সংকট,সাপ বিচ্ছুদের অবাধ বিচরণে চলে যান তারা।এত সব সমস্যায় জর্জরিত এই সেবা কেন্দ্রটির বিগত ও বর্তমান নিয়ে কথা হয় এই এলাকার জনগন, সার্বক্ষণিক সেবাদানকারী ফ্যামিলি প্লানিং ইন্সপেক্টর, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা মেডিকেল অফিসারের সাথে।কেন এত সমস্যায় এই সেবা মাধ্যমটি, কি চাওয়া পাওয়া এবং করনীয় বিষয় নিয়ে কথা বলেন তারা।এলাকাবাসীরা বলেন, যখন এই সেবা কেন্দ্রটি চালু হয় এখানে আমরা স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে অনেক খুশি ছিলাম।আমরা চাই আবার এই স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি চালু হোক যাতে করে আমরা হাতের কাছেই কাঙ্খিত সেবা পাই এবং দূর দূরান্তে স্বাস্থ্য সেবা নিতে গিয়ে কষ্ট আর ভুগান্তিতে পড়তে না হয়। এলাকাবাসী আরো বলেন, উপজেলা মেডিকেল অফিসার সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এবং মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এই উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উপর যেন সু-দৃষ্টি দিয়ে পুনরাই চালু করার ব্যবস্থা করে।

ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নেছার উদ্দিন বলেন,দীর্ঘদিন যাবত এখানে ডাক্তার নাই।যোগাযোগ করেও কোন ডাক্তার আসেনী। উপজেলা মেডিকেল অফিসারের কাছে একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু বলার পরেও উনি কোন সুরাহা করতে পারেননি।তারা বলেন এমনিতেই ডাক্তারের অভাব কোথা থেকে ডাক্তার দেব।প্রতিষ্ঠানটি তৈরীর পরে কয়েক বছর খুব ভাল ভাবে চলেছে কিন্তু বর্তমান প্রতিষ্ঠানটির এই নাজুক অবস্থা। কোন বরাদ্দ নাই এই সেবা কেন্দ্রের।ঝিকরগাছা উপজেলা মেডিকেল অফিসার শহীদুল ইসলাম তরফদার বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক জনবল সংকট।বার বার উপর মহলে এক বিষয়ে বলে বলে মুখ ব্যাথা হয়ে গেছে।কোন ভাবেই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারিনি।এতদিন ধরে বন্ধ প্রায় সেবা কেন্দ্রের সব সমস্যা কাটিয়ে উঠে আবার চালু হতে সময় লাগবে।আমি অতি দ্রুত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সহ সাপ বিচ্ছু তাড়ানোর ব্যবস্থা করছি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর