জুমার নামাজ পড়ে এসেই বাবাকে খুন!

যশোরের মনিরামপুরে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ছেলের শাবলের আঘাতে তাজুল ইসলাম পাটোয়ারি (৬৫) নামে এক পিতা খুন হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২২ মার্চ) জুমা নামাজের পর উপজেলার গালদা গ্রামে।

নিহত তাজুল ইসলাম উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের গালদা গ্রামের মৃত হাসান আলী পাটোয়ারীর ছেলে। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন (৩৫) ঘটনার পর পালিয়েছে।

খবর পেয়ে মনিরামপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যায় নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী আনোয়ার বেগম, ছোটভাই মাজু মিয়া, বড় পুত্রবধু মুন্নি খাতুন, ছোট পুত্রবধু রেহেনা খাতুনকে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার এসআই খান আবদুর রহমান জানান, নিহত তাজুল ইসলামের বড় ভাই নাজমুল ইসলাম পটোয়ারি যশোর শহরে জমি ক্রয়ের তোড়জোড় করছিলেন। এতে ছেলে আনোয়ারের সন্দেহ হয় তাদের পাঠানো টাকা দিয়েই ওই জমি ক্রয় করা হচ্ছে। এ নিয়ে নিহত তাজুল ইসলামের সঙ্গে আনোয়ারের কথাকাটির একপর্যায়ে ঘরে থাকা শাবল দিয়ে বাবাকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন।

খবর পেয়ে পরিদর্শক (সার্বিক) সহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে খেদাপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সালাহ উদ্দিন নিহতের স্ত্রী আনোয়ার বেগম, ছোট ভাই মাজু মিয়া, বড় পুত্রবধূ মুন্নি খাতুন, ছোট পুত্রবধূ রেহেনা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছেলের হাতে থাকা শাবলের আঘাতে বাবা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। খবর পেয়ে মনিরামপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যায় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয় ইউপি মেম্বর ইকরামুল হোসেন জানান, নিহতের দুই ছেলে আনোয়ার হোসেন এবং হুমায়ুন কবির মালোশিয়ায় চাকরি করতেন। সম্প্রতি তারা বাড়িতে আসেন। তাদের পাঠানো টাকা নিয়ে বাবার সাথে বিবাদ চলছিলো। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

নিহতের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমসহ এলাকাবাসী জানায়, তাজুল ইসলামের দুই ছেলে মালয়েশিয়া থেকে বাবার কাছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা পাঠায়। সম্প্রতি দুই ছেলে বাড়িতে এসে বাবার কাছে ওই টাকার হিসাব চায়। কিন্তু তিনি সেই টাকার হিসাব দিতে ব্যর্থ হন। এনিয়ে বাবার সাথে দুই ছেলের ভুল বোঝাবুঝি হয়।

নিহতের ছোট ভাই প্রত্যক্ষদর্শী মাজু মিয়া জানান, শুক্রবার বাবা ও ছেলে গ্রামের মসজিদ থেকে জুমার নামাজ আদায় শেষে বাড়িতে আসে। দুপুর আড়াইটার দিকে ঘরের মধ্যে ওই টাকা নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছেলে আনোয়ার হোসেন লোহার শাবল দিয়ে ঘাড়ে এবং পিঠে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তাজুল ইসলাম মারা যান।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর