বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকাদের ফাঁদে পড়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তার আত্মহত্যা

রাজশাহীতে অবসরে যাওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ। তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ায় দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ঢাকা থেকে ওই দুই নারীকে গ্রেফতার করে। পরে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানা যায়।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন হলেন আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪)। তিনি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বালিচ গ্রামের বাসিন্দা। অপর গ্রেফতার শামীমা ঢাকার সাভারের ডেন্ডাবর নতুনপাড়ার বাসিন্দা। তার দুজনই সাভারের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার আড়ালে মানুষকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করতেন।

জানা যায়, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী উপশহরের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে সাবেক সেনা সদস্য মজিবুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ছেলে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তে দিয়েই বের হয়ে আসে দুই শিক্ষিকার সম্পৃক্ততা।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার দুই নারী স্বেচ্ছায় রাজশাহীতে মজিবুরের বাড়ি এসেছিলেন। মজিবুরের সঙ্গে আইরিনের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। রাতে তারা মজিবুরের পাশের ঘরে শুয়েছিলেন। মজিবুর ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আইরিনকে নিজ ঘরে ডাকেন। আইরিন সাড়া না দিলে তাদের মধ্যে মেসেঞ্জারেই বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মজিবুর বলেন, রাত ৩টার মধ্যে আইরিন তার ঘরে না গেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।

আইরিন মেসেঞ্জারে ও এসএমএসের মাধ্যমে মজিবুরকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করেন। অভিমানে মজিবুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে সকালে আইরিন ও শামীমা তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন, বাড়ির চাবি, নগদ চার লাখ টাকা ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশ কমিশনার আরও জানান, সাবেক সেনা কর্মকর্তার আত্মহত্যার সঙ্গে এ দুই নারীর সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মৃত মজিবুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। তারা শিক্ষকতা পেশার আড়ালে মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করতেন। ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে আনার পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর