চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা ও দূর্ভোগ চরমে

জেলার একমাত্র সরকারী হাসপাতাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতাল। সেখানে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। সঠিক সময়ে কোভিড-১৯ টিকা দেয়ার কাজ শুরু না করা এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কাজ করছেন টিকা গ্রহণকারীদের দাঁড় করিয়ে রেখে।

টিকা গ্রহণকারীরা প্রতিবাদ করলে, উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন পরিচ্ছন্ন কর্মী। শেষ পর্যন্ত সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একদিকে শুরু হয় করোনার ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ।

অন্যদিকে, একইসাথে চলে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও। এছাড়াও রয়েছে, জেলা হাসপাতালে দালালচক্র ও রোগীর পরিবারদের হয়রানী এবং চিকিৎসা সেবা সঠিকভাবে না পাওয়ার বিষয়টিও। তবে অপরিস্কার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের বিষয়টি পুরোটাই নজরে নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, রবিবার সকাল ৯টা থেকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সকাল সোয়া ৯টা পর্যন্ত টিকা প্রদানের স্থানে আসেনি টিকা প্রদানকারীদের কেউই। সকাল সোয়া ৯টার দিকে ওই স্থানের ঘরসহ পার্শবর্তী এলাকা পরিস্কার করছিলেন হাসপাতালের একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী। পরিস্কার করছিলেন গত কয়েকদিনের জমা হওয়া টিকার জন্য ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ও অন্যান্য উচ্ছিস্ট জিনিষপত্র।

করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের সময় সকাল ৯টা, ফলে সময়ের আগে থেকেই টিকা গ্রহণকারী পুরুষ ও মহিলারা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন।

এই টিকা প্রদান শুরু হবে, শুরু হবে, কিন্তু রোববার টিকা প্রদান কাজ শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। এই অব্যবস্থাপনা দেখার যেন কেউ নেই। যে যার মত চলছেন। ফলে রবিবার সকালে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান স্থানে একপ্রকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

কিন্তু উপায় নেই, পরিস্থিতি যাই হোক, টিকা তো নিতে হবে? এদিকে, কেউ প্রতিবাদ করলে, প্রতিবাদকারীই পড়েন বিপদে। এছাড়াও রয়েছে, করোনা ভ্যাকসিন নিতে আসা নারী-পুরুষের সাথে টিকা প্রদানকারীদের নানা দূর্ব্যাবহারের অভিযোগও।

আসলে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান বেশীর ভাগ দরিদ্র-অসহায় পরিবারের লোকজন। আর দরিদ্র পরিবারের লোকজন প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। ফলে হাসপাতালের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই যে যার মত চলছেন।

এছাড়া জেলা হাসপাতালের পুরো এলাকাতেই দেখা গেছে অপরিস্কার ও দূর্গন্ধের ছাপ। এর আগেও গত ১৮ আগষ্ট টিকা প্রদান স্থান ও পাশর্^বর্তী এলাকা পরিস্কার করতে দেখা গেছে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার দিকে।

এমনকি জেলা হাসপাতাল চত্বরও পরিস্কার করতে দেখা গেছে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। সবমিলিয়ে জেলা হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অবস্থা এমনই, রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকজন আরও অসুস্থ্য হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

আবার, জেলা হাসপাতালে ভালো সেবা বা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে, জেলা হাসপাতালের পার্শবর্তী বেসরকারীভাবে গড়ে উঠা ক্লিনিকগুলোর রোগী কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। জেলা হাসপাতালে সেবার মান ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পরিবেশ এমনই দেখা গেছে, নিরুপায় হওয়া ছাড়া, এমনিতেই মানুষ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে বেসরকারী ক্লিনিকগুলাতে চিকিৎসা নিতে চলে যাচ্ছে।

হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টির দিকে নজর দিয়ে সঠিক ও সুষ্ঠভাবে সেবা দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনটাই আশা সচেতন মহলের।

এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মমিনুল হককে বিষয়টি তাৎক্ষনিক অবহিত করা হলে তিনি জানান, এমনটি হওয়ার কথা নয়, সকাল ৮টার মধ্যে হাসপাতালসহ করোনা ভ্যাকসিন প্রদান স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখার কথা। যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে, কি কারণে হয়েছে, তা জেনে বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।

আব্দুস সোবহান তারেক/বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর