সাদা কাগজে লিখে বাল্যবিয়ে দিলেন কাজী

মেয়ের বয়স ১৫ আর ছেলে বয়স ১৮। দুজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এমন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়ের হাতে বানানো ভূয়া জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বাল্য বিয়ে পড়ান কাজী। তবে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধীকরন) আইনানুযায়ী রেজিস্ট্রার খাতায় তালিকাভুক্ত করা হয় না। সাদা কাগজে লিখেই বিয়ে কার্য সম্পন্ন করেন কাজী।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নে। এমন কান্ড করেন দাশপাড়া ইউনিয়নের কাজী মো. ফারুক হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের স্কুল পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর সাথে দাশপাড়া ইউনিয়নের খেজুর বাড়িয়া গ্রামের মো. ছালাম হোসেনের ছেলে মো. জিয়ার বিয়ে্র আলোচনা চলে। ছেলে মেয়ের বয়স না হওয়ায় বিয়ে দিতে বিপত্তিতে পরেন উভয় পক্ষ। পরে কাজী মো. ফারুক হোসেনের পরামর্শ মতে কম্পিউটার দিয়ে ভূয়া জন্ম নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র বানানো হয়। সেই জন্ম নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দিয়ে বিয়ের আয়োজন করেন কাজী। তবে বিয়ে রেজিস্ট্রারভুক্ত করা হয় নি। সাদাকাগজে লিখেই বিয়ে সম্পন্ন করেন তিনি। বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য কাজীকে দিয়ে হয় অতিরিক্ত টাকা।

সরেজমিনে মিলে সত্যতা। দেখা যায় কাজী ফারুক হোসেন দাশপাড়া মুসলিম পাড়া এলাকায় তাঁর বাস ভবনে বসে বিয়ে পড়ানোর কাজ করছেন। মেয়ে-ছেলে ও স্বাক্ষীদের নাম লিখে রাখছেন সাদা কাগজে। গণমাধ্যমের উপস্থিতি টের পেয়ে মুহুর্তেই পালিয়ে যায় ছেলে-মেয়ে পক্ষ।

উপজেলার কয়েকজন কাজী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বয়স সংক্রান্ত ঝামেলা থাকলে আমরা বিয়ে পড়াই না। কিন্তু কাজী ফারুক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাল্য বিয়ে পড়ান’।

তবে বিয়ে পড়ানোর কথা অস্বীকার করে কাজী ফারুক হোসেন বলেন, ‘ছেলে মেয়ের নাম-ঠিকানা খাতায় লিখে রেখেছি মাত্র। বিয়ে পড়ানো হয়নি’।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আল-আমিন বলেন,‘ খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

এম.এ হান্নান/বার্তা বাজার/অমি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর