বাংলাদেশের সঙ্গে নামের মিল থাকায় ‘বাংলা’ হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গের নাম

বাংলাদেশের সঙ্গে নামের মিল থাকায় পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ হচ্ছে না। রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রস্তাবে অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার।

বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, রাজ্যের নাম ‘পশ্চিমবঙ্গ’ থেকে পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন করছে না।

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব বার বার খারিজের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আবারও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। কয়েকদিন আগেই রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন।

এর আগে ২০১৬ সালের আগস্টে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের প্রস্তাব গৃহীত হয় বিধানসভায়। রাজ্যের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে নতুন নাম রাখার বিষয়ে সম্মতি জানায়। বঙ্গ, বেঙ্গল ও বঙ্গাল নামে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ৩টি ভাষায় তিনটি নাম বাছাই হয় সেসময়। কিন্তু রাজ্যের নাম বদলের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, পৃথক পৃথক নাম নয় বরং তিনটি ভাষায়ই এক নাম হতে হবে। তবেই নাম বদল করা যাবে। এর পরপরই রাজ্য সরকার রাজ্যের নাম তিন ভাষায়ই ‘বাংলা’ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

সর্বসম্মতির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে নাম বদলের সেই প্রস্তাব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্র। এ নিয়ে তিনবার রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব নাকচ করলো নয়াদিল্লি।

পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার রাজ্যসভায় রাজ্যের নাম বদলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চান সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাজ্যের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। সেখানেও নামে ‘বাংলা’ রয়েছে। ফলে এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে কেন্দ্রের এই যুক্তি মানা হবে না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের উদাহরণ তুলে ধরে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার।

তৃণমূল সরকারের যুক্তি, পাকিস্তানেও ‘পাঞ্জাব’ নামে একটি প্রদেশ রয়েছে। অন্যদিকে ভারতেও ‘পাঞ্জাব’ নামে রাজ্য রয়েছে। এতে যদি কোনো সমস্যা না হয়; তাহলে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ রাখায় সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অযৌক্তিক। কারণ, প্রতিবেশী দেশের পুরো নাম বাংলাদেশ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর