বিতর্ক: ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে!
ছাত্র অধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লার কুড়িগ্রামে নিজ জেলায় এসে কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে শহীদ মিনার চত্বরে ফুলেল শুভেচ্ছা নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বেদীর নিচে সিঁড়ির কাছে কর্মী সমর্থকসহ জুতা পায়ে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিরস্কারের শিকার হচ্ছেন কুড়িগ্রামের সন্তান এই ছাত্র নেতা।
বেদীর নিচে দাঁড়িয়ে স্যান্ডেল পায়ে ফটোসেশন করাকে নেটিজেনদের অনেকে ‘বেদীতে জুতা পায়ে দাঁড়িয়ে’ শহীদ মিনারের ‘অবজ্ঞা’ হয়েছে দাবি করে বিন ইয়ামীন মোল্লাসহ সংশ্লিষ্টদের ‘বিচার’ দাবি করেছেন।
তবে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগকে ‘অপপ্রচার’ দাবি করে এটিকে স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, কর্মী সমর্থকসহ তিনি বেদীর নিচে, এমনকি সিঁড়ির নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। একজন ছাত্র হিসেবে তিনি কখনও শহীদ মিনার ও শহীদদের অবজ্ঞা কিংবা অসম্মান করতে পারেন না।
ছাত্র অধিকার পরিষদের নব নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লার বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের মোল্লা পাড়া গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী। নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ জেলায় এটাই তার প্রথম সফর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র অধিকার পরিষদের নব নির্বাচিত কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) নিজ জেলা কুড়িগ্রামে আসেন বিন ইয়ামীন মোল্লা। এদিন সকালে জেলা শহরের ঘোষপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন তিনি।
এসময় নেতাকর্মীদের নিয়ে ফটোসেশনেও অংশ নেন নব নির্বাচিত এই ছাত্র নেতা। ফটোসেশনের সেই ছবিকে ‘বেদীতে জুতা পায়ে দাঁড়ানো’ অভিযোগ এনে এ নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা বিতর্কের পর অনেকে বিন ইয়ামীন মোল্লা ও তার সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এ বিষয়ে কথা হয় বিন ইয়ামীন মোল্লার। তিনি তার ও তার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো অভিযোগ নেহায়েত অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জুতা বা স্যান্ডেল পায়ে শহীদ মিনারের বেদীতে উঠিনি। এমনকি আমরা বেদীতে ওঠার সিঁড়িতেও উঠিনি। ছবিটি ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন আমরা কিন্তু সিঁড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছি।’
নিজের বিরুদ্ধে সৃষ্ট সমালোচনার বিষয়ে এ ছাত্র নেতা বলেন,‘যারা এগুলো ছড়াচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা পুরোপুরি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ কথাগুলো ছড়াচ্ছে। ছবিগুলো যদি খুব স্পষ্টভাবে দেখেন তাহলে দেখবেন যে আমরা কিন্তু জুতা পায়ে কেউ বেদীতে উঠি নাই এবং বেদীতে ওঠার যে সিঁড়ি সে সিঁড়িতেও উঠি নাই।’
নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। আমি শহীদ মিনারে ওঠার শিষ্টাচার জানি।’
সুজন মোহন্ত/বার্তা বাজার/এসবি