কারাগারে সবার পরিচয়, বের হয়ে অপরাধের বিশাল নেটওয়ার্ক

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকার সময় তাদের সবার পরিচয় হয়। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব। আর জামিনে বের হয়ে কারাগারের বন্ধুরাই একসাথে মিলে নামে অপরাধের বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে। এভাবেই তারা সংঘবদ্ধভাবে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছিল।

সাভারের আশুলিয়ায় থেকে তারা সবাই গাড়ি চালানোর পেশায় নিয়োজিত ছিল। সামনের গাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করার সময় পেছনে থাকতো আরো একটি প্রাইভেটকার। সাথে থাকতো ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ ও পুলিশের বিশেষ পোশাক। কাজশেষে প্রাইভেটকারে করে পালাতো ওরা।

এসব ঘটনার অভিও্যগের ভিত্তিতে চক্রটির ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছে থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা।

আটকরা হচ্ছেন- মধুখালীর বাগাটের জাকির হোসেন বিশ্বাসের ছেলে জুয়েল রানা (৩১), তার ভাই আল আমীন (৩০), আলফাডাঙ্গার কামারগ্রামের রবিউল আলমের ছেলে বাবুল আক্তার (৪৩), বালিয়াকান্দির আড়পাড়া গ্রামের বাল্লুক মৃধার ছেলে অশিক মৃধা (৩৭) ও আশুলিয়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে ইমরান হোসেন (২৩)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশ বলেন, মুন্নু শেখ (৩৫) নামে একজন এনজিওকর্মী ৯ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেলে ঢাকার বাড্ডা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাত ৯টার দিকে পাঁচ ছিনতাইকারী কানাইপুরের করিমপুর হাইওয়ে ব্রিজের উপর থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে। তারপর প্রথমে তার সাথে থাকা বেতনের ৩৫ হাজার টাকা ও বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা সাড়ে ১৯ হাজার টাকাসহ তার মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে তাকে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ঘটনার শিকার মুন্নু শেখ বলেন, ছিনতাইকারীরা প্রথমে তার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিতে গেলে তার সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে তাকে পাজাকোলা করে গাড়িতে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে। তার সাথে থাকা টাকা পয়সা কেড়ে নেয়ার পর তাকে বাড়ি থেকে ফোন করে দুই লাখ টাকা পাঠানোর জন্য বলতে বলে। এরপর তিনি বাড়িতে ফোন করে যত টাকা পারে পাঠাতে বলেন। তিনি জানান, টাকা পয়সা নেয়ার পর ছিনতাইকারীরা চোখ বেঁধে তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিতে চাইলে তিনি চোখ খুলে নামিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই চক্রের মূল মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন জুয়েল রানা। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ১৬টি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় সাড়ে চার বছর সাজা খেটে কোরবানির ঈদের আগে তিনি কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে বের হন।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর