টাঙ্গাইলের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গ্রেফতার

টাঙ্গাইলের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান রনি ওরফে কোয়ার্টার রনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় খুন, অস্ত্র ও ছিনতাইসহ ৯টি মামলা রয়েছে।

কোয়ার্টার রনি টাঙ্গাইল শহরের দেওলা কোদালিয়া এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে। গ্রেফতারকৃত আতিকুর রহমান রনি টাঙ্গাইলে কোয়ার্টার রনি হিসেবে পরিচিতি। এছাড়া কোয়ার্টার রনি টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার সহযোগী হিসেবে পরিচিত।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর)  রাতে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় রোববার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। এদিকে ছিনতাই মামলাতে পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়। পরে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১২ সালে কোয়ার্টার রনি ও তার সহযোগীরা টাঙ্গাইলের পিচুরিয়া এলাকা থেকে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন নামের দুইজনকে অপহরণের পর খুন করে লাশ গুম করার ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় কোয়ার্টার রনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। কোয়ার্টার রনির বিরুদ্ধে দুইটি খুন, ৪টি অস্ত্র মামলাসহ আরো তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও সে সদর থানায় দায়ের হওয়া ছিনতাই মামলার আসামী। তার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল গেটে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মাদকদ্রব্যসহ ৯টি মামলা রয়েছে। এর আগে কোয়ার্টার রনি হাসপাতালের ভান্ডার রক্ষককে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। সে সময় পুলিশ তাকে পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছিল। সে বিভিন্ন মামলার আসামী হয়েও টাঙ্গাইল শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, কোয়ার্টার রনির বিরুদ্ধে খুন ও অস্ত্র মামলাসহ ৯টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এরমধ্যে একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ছিল। সে পুলিশের খাতায় একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। শনিবার রাতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, টাঙ্গাইলে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেয়া হবে না। জেলা পুলিশ ১০ জনের অধিক সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। জেলার বাকি সকল সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চলমান থাকবে।

এদিকে বিগত ২০১৯ সালের ২২ জুলাই রাতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল এলাকা থেকে কোয়ার্টার রনিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ সময় তার কাছ থেকে দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান (এল.জি) ও দুইটি রাবার বুলেট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা থেকে বিগত ২০১৮ সালের ৭ অক্টোবর তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সে সময় হত্যা ও অস্ত্রসহ ৬টি মামলা ছিল।

হাসান সিকদার/বার্তা বাজার/এসবি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর