সরকারি স্কুলের মাঠ দখল করে কলাবাগান, চলছে পাঠদান

২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে। সেই সুযোগে বিদ্যালয়ের মাঠে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে কলাগাছ রোপন ও তালা লাগিয়ে দখলে নেয় জমিদাতা পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে গেলে তাদের হুমকি দমকি দেওয়া হয়। এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলেও বিদ্যালয়টি দখলমুক্ত করতে পারেনি প্রশাসন।

ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার পিয়ারজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বর্তমানে পাঠদানের একমাত্র টিন শেড ঘরটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মাঠ থেকে কলাগাছ সরানো হয়নি। এ অবস্থায় ১২ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি খোলা হলেও পাঠকার্যক্রম চালাতে ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, কুতুবপুর গ্রামে আছর আলীর স্ত্রী পিয়ারজান বিবি ১৯৭৪ সালে ৫১ শতক জমি দান করেন ওই বিদ্যালয়য়ের নামে। জমিদাতা বর্তমানে বেঁচে নেই। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ হয়। এর পর থেকেই বিদ্যালয়টির জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে জমিদাতা পরিবারের লোকজন। এ অবস্থায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনার প্রকোপ শুরু হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সেই সুযোগে বিদ্যালয়ের মাঠ ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে কলাগাছ রোপন করে দখলে নেয় তারা। এর মধ্যে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও জমিদাতা পরিবারের স্বনজনের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা চলে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকেয়া খাতুন বলেন, গত ২৯ মে স্থানীয় পর্যায়ে একটি সালিশ হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় জমিদাতার স্বজনরা বিদ্যালয়কে ৩১ শতক জমি দলিল করে দেবেন। এর বিনিময়ে তাদের তিন লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন জমি লিখে দেওয়ার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। আর গাছগুলো সরানো হচ্ছে না।

জমিদাতার নাতী আবুল ইসলাম জানান, তিন লাখ টাকা পেয়েছেন। তবে জমি লিখে দিতে হলে আগের দলিল বাতিল করতে হবে। গাছগুলো সরানোর বিষয়ে জানতে চাইতে তিনি এই বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড একটি ঘরে পাঠ কার্যক্রম চলছে। শিক্ষার্থী উপস্থিতি খুবই কম।

এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, মাঠে কলাগাছ রোপন করার কারণে খেলাধুলা করা যায় না। শুনেছি স্কুল নিয়ে ঝগড়া চলতাছে, তাই তেমন আসি না।

এই বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, মীমাংসা হওয়ার পরও গাছগুলো কাটতে দিচ্ছে না। এখন স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

মজিবুর রহমান ফয়সাল/বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর