মঠবাড়িয়ায় বিরোধপূর্ণ জমিতে কাজী অফিস: ঘর ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় বিরোধপূর্ণ জমিতে কাজী অফিস করে প্রকৃত জমির মালিককে ঘর ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কাজী ঘর মালিকের প্রতিপক্ষের সাথে যোগসাজশ করে অবৈধভাবে ঘর দখলে রেখেছে। কাজী অফিস অন্যত্র না সরিয়ে কথায় কথায় কথিত ঘর মালিককে বাদী বানিয়ে প্রকৃত ঘর মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে আসছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, উপজেলা-মঠবাড়িয়া মৌজা-মিঠাখালী জেএল নং-৩৭, এসএ খতিয়ান নং-৫৭৭, দাগ নং-৩৮৪৬, জমির পরিমান – ৩ শতাংশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। দক্ষিণ বন্দর জামে মসজিদের সামনে সড়ক সংলগ্ন বিরোধীয় জমিতে থাকা ঘর ভাড়া নিয়ে বিরোধ দেখা দেওয়ায় উক্ত কাজী অফিসটি সুবিধাজনক ও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেকেই।

একাধিক মামলার অভিযোগ ও আদেশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জমি দাতা হাজী ছাদেক আলী খান ২৬.১২.২০০২ খ্রি. তারিখ ৬৪১৫ নং কবলা দলিল এবং ২৭.০৩.২০০৩ খ্রি. তারিখ ১৫৭৯ নং কবলা দলিলে ৩য় কন্যা ছালেহা বেগমকে উপরোক্ত তপসিলভুক্ত ৩৮৪৬ দাগ থেকে ১।। শতাংশ জমি লিখে দেন।

৬৪১৫/০২ নং দলিল চ্যালেঞ্জ করে ও সংশোধনী চেয়ে ছাদেক আলী খানের ২য় কন্যা তৈসর বেগম দুলিয়া বাদী হয়ে পিরোজপুর দেং নং ২৬/০৮ মামলা করেন। মামলাটি চলমান আছে। তবে মূল দলিল না থাকায় সংশোধনী সম্ভব নয় বলে ধারনা করা যায়।

দলিল নং ১০১২/০৬ এর বিরুদ্ধে হাজী ছাদেক আলী খান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা নং জি.আর ২০৭/০৭ ( মঠবাড়িয়া)। মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামী আঃ খালেক মুন্সী তার জামাতা এবং আসামী ছালেহা বেগম তার কন্যা। আসামীরা অন্যায়ভাবে উক্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে গত ২৫.০৪.০৬ খ্রি. তারিখে ছালেহা বেগমকে দাতা সাজিয়ে এবং আঃ খালেক মুন্সীকে গ্রহীতা উল্লেখে একটি জাল দলিল তৈরি করেন।

অত্র মামলার ১ম রায় দানকারী বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার রায়ে পর্যবেক্ষণ দেন যে, ১০১২/০৬ দলিলটি বে – আইনি বা অকার্যকর হতে পারে কিন্তু জাল নয়। আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেন।

সম্প্রতি কাজী অফিসের ওই দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে মঠবাড়িয়া থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে শালিসনামা সৃষ্টি হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টায় মঠবাড়িয়া থানা কমপ্লেক্সে শালিসি হবে বলে উল্লেখ করা হয়। উভয় পক্ষের স্বাক্ষরিত ওই শালিসনামায় ১ম পক্ষের মনোনীত শালিসদার এ্যাডভোকেট দিলিপ কুমার পাইক এবং ২য় পক্ষের মনোনীত শালিসদার এ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।

কাজী মোঃ ফরিদুল ইসলাম জানান, হাজী ছাদেক সাহেবের কোন ছেলে সন্তান নেই। মেয়েদের নামে জমি লিখে দিছেন। ৫ম কন্যা মনোয়ারা বেগম এবং ২য় কন্যা ছালেহা বেগম কাজী অফিসের ঘরটি নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। আমি একপক্ষকে ভাড়া দেই কিন্তু অন্য পক্ষ এটি মেনে নিতে পারছে না।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার ওসি মুহাঃ নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে কাজী অফিসের বিরোধীয় ওই ঘরটি কয়েকদিনের জন্য তালাবদ্ধ করে রেখেছিলাম। কিন্তু ওই অফিসে সরকারি অডিট থাকায় কাজী সাহেবকে চাবি দিয়ে দিয়েছি। বিশৃঙ্খলা হলে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

শাহজাহান/বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর