প্রবাসী সুন্দরীর ফাঁদে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট, গচ্ছা অর্ধকোটি
পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের স্থায়ী হওয়ার প্রলোভনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এমএবিএম খায়রুল ইসলামের (৪৭) প্রতারক চক্রের হাতে দিয়েছে ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। এ প্রতারণায় জড়িত প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো.সাইমুন ইসলাম (২৬) ও মো. আশফাকুজ্জামান খন্দকার (২৬)। এ সময় একটি কম্পিউটার, জাল ভিসা ও জাল টিকিটসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তাদের কাছে থেকে জব্দ করা হয়। প্রতারক চক্রের প্রধান উম্মে ফাতেমা রোজীকে (৩৫) দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।
তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে জাল ভিসা প্রস্তুত করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রবাসী উম্মে ফাতেমা রোজী। তিনি মাঝেমধ্যে দেশে এসে উচ্চবিত্তদের টার্গেট করে আত্মীয়ের ভিসায় অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাবেন বলে প্রলোভন দেখান। সপরিবারে গেলে (স্বামী-স্ত্রী) ২৩ লাখ আর একা গেলে ১৮ লাখ, সে হিসেবে চুক্তি করতেন তিনি। রোজী নিজেকে অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশন কনস্যুলার জেনারেল হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন।’
সিআইডি আরও জানায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এমএবিএম খায়রুল ইসলামের সঙ্গে রোজীরর দেশে থাকাকালীন পরিচয়। সে সময় তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কাছ থেকে পুরস্কৃত হন ও পুরস্কারের ছবি ভুক্তভোগীকে দেখান। এতে করে ভুক্তভোগী আইনজীবী বিশ্বাস করতে থাকেন। এরপর অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশনমন্ত্রী এলেক্স হাউকির সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও জানান রোজী।
এরপর পরই ধাপে ধাপে কাগজপত্র ও ভিসার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতে থাকেন। ওই আইনজীবীও তার ফাঁদে পড়ে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের আট সদস্যসহ অস্ট্রেলিয়ায় যেতে চেয়েছিলেন তিনি। এজন্য রোজীর দেওয়া দু’টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা দেন এ আইনজীবী। টাকা দেওয়ার পর কাগজপত্র ও ভিসা হাতে পেয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখতে পান সবগুলোই ভুয়া এবং জাল।
অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী আইনজীবী প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ১ জুলাই রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় শনিবার বনশ্রী ও শাজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি।’
বার্তা বাজার/এসবি