ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে ঘটছে দূর্ঘটনা

রাশেদুল হক, শেরপুর (বগুড়া): নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে শেরপুর উপজেলায় অবাধে বেপরোয়া গতিতে চলছে সিএনজি অটোরিকশা। এ সকল যানবহনের দৌরাত্ব বাড়ায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা বেড়েছে যানজট। স্থানীয় বাসস্টান্ডের মহাসড়কের দুপাশ জুড়ে সিএনজির অবাধ বিচরনের ফলে দুরপাল্লাগামী গাড়ির চলাচলে হচ্ছে বাধাগ্রস্ত।

জানা যায়, মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজি গুলোর বেশিরভাগ চালকই অদক্ষ ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন। অবাধে এসব গাড়ি চলাচল করলেও প্রশাসন কোনো বাধা প্রদান করছে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব গাড়ি মহাসড়কে চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগি ফাতেমা বেগম জানান, গত শনিবার বিকেলে বাসস্টান্ড থেকে উপজেলা নিজ বাসভবনে যাওয়ার সময় নন্দিগ্রাম রোডের সামনে পিছন থেকে একটি সিএনজি এসে তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তার কোলে থাকা দেড় বছরের বাচ্চা নিচে পড়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

উল্লেখ্য দেশের মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে সকল মহাসড়কে থ্রি হুইলার অটোরিক্সা, অটোটেম্পু ও সকল শ্রেণীর অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে সরকার। এই আদেশ জারির পর কিছুদিন মহাসড়কে পুলিশ অভিযান চালালেও এখন তা অনেকটাই কমে এসেছে। বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের নিস্ক্রিয়তায় মহাসড়কগুলোতে অবাধেই বীরদর্পে চলছে এই সকল যানবহন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণা করার পর প্রথম দিকে পরিবহন শ্রমিকরা ব্যাপক আন্দোলন শুরু করলেও প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা ও নজরদারির কারণে এক পর্যায়ে জেলা ও উপজেলাধীন মহাসড়কে সব ধরনের সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সিএনজি অটোরিকশার অভাবে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়লেও সময়ের সাথে বিভিন্নরকম লোকাল যানবাহন যাত্রীদের পরিবহন সংকট দূর করতে সক্ষম হয়েছিলো।

এসব অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে সোমবার দুপুরে সরেজমিনে শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর বাজার, ধুনট মোড়, বাসস্টান্ড, কলেজ রোড এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর পর একটি-দুটি করে সিএনজি ও অটোরিকশা মহাসড়কে যাতায়াত করছে।

মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কেন চালানো হচ্ছে তা জানতে চেয়ে একাধিক সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালকের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা বলেন-নির্দিষ্ট সমিতির মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গাড়ি চালাচ্ছি। শেরপুরে ২টি সিএনজি চালিত গাড়ির সমিতি রয়েছে।
মহাসড়ক সংলগন্ন করোতোয়া মার্কেটের সামনে থেকে এক সিএনজি চালককে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, আমরা তো উড়ে যাচ্ছি না। পুলিশের সামনে দিয়েই যাচ্ছি। যদি কোন সমস্যা থাকে তারা দেখবে। তারা বাধা দেবে। আপনারা (সাংবাদিক) একথা জিজ্ঞাসা করার কে? শেরপুরে আপনারমত অনেক সাংবাদিক আছে তারাতো কিছু বলে না।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, শুধু পৌরসভার ধুনটমোড় পর্যন্ত নয়, গত কয়েকদিন ধরে উত্তর দিকেও মহাসড়কের উপর দিয়ে বেশি সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যটারী চালিত অটো চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা অটোরিক্সা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ সেখের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমাযুন কবীর জানান, মহাসড়কে কোন প্রকার সিএনজি, অটোরিক্সা চলাচল ও পার্কিং করতে পারবেনা। তারা শুধু আ লিক সড়কে চলাচল করবে। কিছু চালক অবৈধভাবে মহসড়কের যেখানে সেখানে গাড়ি পাকিং করছে। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর