শখের নার্সারিতে স্বাবলম্বী চারঘাটের সেতাব শেখ

ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি ভালোবাসা সেতাবের। কোথাও গাছ পেলে সেই গাছ রোপণ করতেন বাড়ির আঙিনায়। এরপর জাগে নার্সারি করার স্বপ্ন। বাড়িতেই ছোট পরিসরে করেন গাছ রোপণ। এরপর পার্শ্ববর্তী নার্সারি থেকে গাছের চারা রোপণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি আয়ত্ত করা শুরু করেন তিনি।

সেতাব শেখের বাড়ি চারঘাট পৌরসভার মিয়াপুর গ্রামে। ২০১২ সালে মাত্র ১০ কাঠা জমিতে শখের বসে নার্সারি শুরু করেন। সেই নার্সারি এখন বেড়ে ৫ বিঘা জমিতে।

২০১৭ সালে উপজেলার দীর্ঘগ্রাম এলাকায় ৪ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে বড় পরিসরে শুরু করেন নার্সারি। এরপর ধীরে ধীরে নার্সারিতে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মান ভালো হওয়ায় দূর-দুরান্ত থেকে গাছ কিনতে আসেন অনেকে।

কেউ কেউ গাছের বাগান ঘুরে দেখেন। কেউ গাছ কিনে নেন। শখের নার্সারি একসময় বাণিজ্যিক রূপ পায়। এই নার্সারিতে আয়ের উৎস খুঁজে পান সেতাব শেখ। এরপর আর তাঁকে পেছনে তাকাতে হয়নি।

সেতাব শেখ পড়াশোনা করেছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি বলেন, জীবিকার তাগিদে নার্সারিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। কয়েকবার অতি বৃষ্টিতে গাছের চারা ভেসে গেলেও তাঁর স্বপ্ন কখনোই তাঁকে পেছনে ফিরতে দেয়নি। গাছের চারা বিক্রি করে অতিকষ্টে দিনাদিপাত করেছেন। আর এখন এই নার্সারিতে কর্মসংস্থান হয়েছে ছয়জন বেকার যুবকের।

সেতাব শেখ আরও বলেন, তাঁর নার্সারিতে প্রায় দু শ জাতের গাছ রয়েছে। সূর্যডিম, হাঁড়িভাঙা, ল্যাংড়া, আম্রপালি, হিমসাগরসহ প্রায় ৩০টি জাতের আমের চারা রয়েছে। নার্সারিতে আরও রয়েছে কমলা, মাল্টা, দার্জিলিং কমলা, লটকন, আঙুর, আপেল, বরই, ড্রাগনসহ ২৫ প্রজাতির ফল গাছ।

ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাসনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচূড়াসহ শতাধিক প্রজাতির চারা রয়েছে। এ ছাড়া আছে তেজপাতা, ছোট এলাচ, চুই ঝাল, অল স্পাইসহ বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছও।

চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি করেছেন, তাঁদের নার্সারি নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। বৃক্ষমেলায় তাঁদের চারা গাছ বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে।

মোঃনবী আলম/বার্তা বাজার/টি