প্রশিক্ষণে থেকেও নবীন শিক্ষকদের হলের দায়িত্ব দিলেন ভিসি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন গত ১২ ডিসেম্বর। রয়েছেন ছয় মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ঢাকায়। এরমধ্যেই দুই শিক্ষক পেয়ে গেছেন দুটি হলের সহকারী প্রভোস্টের দায়িত্ব। প্রশিক্ষণে থেকেও নবীন শিক্ষকদের হলের দায়িত্ব দেয়ায় ক্যাম্পাসে তীব্র সমালোচনা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান মো. আব্দুল্লাহ্ আল মাহবুব এবং একই সিন্ডিকেটে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান মোছা. ইমরানা বারী। তারা উভয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন ১২ ডিসেম্বর। ওই মাস থেকেই জুন পর্যন্ত তারা ঢাকায় অংশ নিচ্ছেন বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে।

কিন্তু সরাসরি পাঠদানে অংশ না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে গত ৫ মার্চ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ্ আল মাহবুব নিয়োগ পান শহীদ মুখতার ইলাহী হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে এবং ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মোছা. ইমরানা বারী গত ৭ মার্চ নিয়োগ পান শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে। সিনিয়র শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়োগ দেয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করেছে।

ইলাহী হল সূত্র জানায়, হলটিতে দায়িত্বে রয়েছেন একজন প্রভোস্ট এবং সাতজন সহকারী প্রভোস্ট। এরমধ্যে গত ৫ মার্চ আব্দুল্লাহ্ আল মাহবুব হলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে তাকে চেনেনই না হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

ইলাহী আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলছেন, হলের ফান্ড না থাকায় বেতন না পাওয়া ডাইনিং কর্মচারীরা ডাইনিং বন্ধের হুমকি দিচ্ছে সাত মাস ধরে। কিন্তু সেদিকে নজর না দিয়ে নামকাওয়াস্তে সহকারী প্রভোস্ট নিয়োগে মনোযোগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ঢাকায় থাকায় এসব শিক্ষকদের কেউ চেনেনই না। হলগুলোর কি তাহলে ঢাকায় কোনো শাখা রয়েছে?

শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, উপাচার্য নিয়োগ দেন সহকারী প্রভোস্ট। তাই আমাদের কিছু করার নেই।

এদিকে গত ৭ মার্চ নিয়োগ পেয়েছেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সহকারী প্রভোস্ট মোছা. ইমরানা বারী। তিনিও ঢাকায় প্রশিক্ষণে রয়েছেন। প্রশিক্ষণে থেকে কিভাবে হলের দায়িত্ব পালন করছেন জানতে চাইলে হলটির প্রভোস্ট ড. সরিফা সালোয়া ডিনা বার্তা বাজারকে বলেন, এটা নিয়ে নিয়োগকর্তাকে প্রশ্ন করুন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক জানান, অবিবেচনাপ্রসূত দায়িত্ব প্রদান উপাচার্যের চরম উদাসিনতার বহিঃপ্রকাশ। লিয়াজো অফিসের নামে তিনি নিজেই দিনের পর দিন ঢাকায় থাকেন। তাই ঢাকায় থেকেই তিনি সব করতে চান।

এ ব্যাপারে কথা বললে বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খাইরুল কবীর সুমন বলেন, উপাচার্যের এমন কর্মকাণ্ড বড়ই হাস্যকর। ঢাকায় প্রশিক্ষণে থেকেও কিভাবে হলের সহকারী প্রভোস্ট হওয়া যায়, এটা কেবল উপাচার্যই জানেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর