মোহাম্মদ আনছারুল হক এখন সফল ইংরেজি শিক্ষক

মোহাম্মদ আনছারুল হক। ফাউন্ডার অ্যান্ড সিইও “Magic English Learning School” এন্ড ক্যালিফোর্নিয়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ। লেখক : “Magic English Spoken and Written” বই।

বর্তমানে এতো সাফল্য অর্জনকারী ব্যক্তির জন্ম যদিও নিরক্ষর এক ফ্যামিলিতে। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে বাবার সাথে কৃষি কাজ করে। কৃষি কাজের পাশাপাশি ফাঁকে ফাঁকে চলত তার পড়াশোনা। সংসারের অভাব অনটনের জন্য স্কুল মিস করে বাবার সাথে কৃষি কাজে সময় দিতে হতো তাকে। তবে রাত জেগে দীর্ঘ সময় পড়াশোনার এক অভ্যাস তাকে জীবনে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখায়।

সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগায়। তিনি পড়াশোনার জীবনে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু এস.এস.সি পরীক্ষায় ইংরেজিতে C গ্রেট পাওয়ার পর তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। ইংরেজি শিখার অদম্য আগ্রহ এবং জিৎ চেপে বসে তার মনে। তাইতো একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শুরু করেন ইংরেজি শিখার বিভিন্ন কোর্স করা।

তুখোড় মেধাকে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছুদিন চেষ্টা করে ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে মোটামুটি বুৎপত্তি অর্জন করে ফেলেন। তারপরে আরো পড়াশোনা করে নিজেই পরিপূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় কোর্স ও কোচিং সেন্টারে স্পোকেন ইংলিশের উপর ক্লাস নিতে শুরু করেন। সেই সুবাদে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন স্পোকেন ইংলিশ একাডেমী “Magic English Learning School.”।

যার মাধ্যমে শুরুতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শুরু হয় খুব সহজে ম্যাজিক পদ্ধতিতে ইংরেজি শেখার মাল্টিমিডিয়া ফ্রী সেমিনার। সেমিনারে শত শত মানুষ অনুপ্রাণিত হয়ে ভর্তি হতে শুরু করেন তার একাডেমিতে। একাডেমি চলতে থাকে পুরোদমে। তারপর ধীরে ধীরে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের অনুপ্রেরণায় শুরু করেন বাচ্চাদের জন্য স্কুল- ক্যালিফোর্নিয়া কিন্ডারগার্টেন।

যে প্রতিষ্ঠানটিও সারা বাংলাদেশে ইতোমধ্যে পরিচিত লাভ করেছে। তারপর তার মাথায় চিন্তা আসলো কীভাবে আরো অগণিত মানুষের মাঝে খুব সহজে ইংরেজি শিখার এই প্রয়াসকে ছড়িয়ে দেয়া যায়। সেই ভাবনা থেকে শুরু করেন রাত জেগে ভিডিও কনটেন্ট তৈরির কাজ। যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ফেসবুকে ক্লাসগুলো দেখতে থাকেন আর অনুপ্রেরণা দিতে থাকেন। এভাবে প্রথমে ফেসবুকে, তারপরে কাজ শুরু করেন ইউটিউবে।

যদিও শুরুতে কিছুটা অভিজ্ঞতার কারণে প্রথম চ্যানেলটি ইউটিউব কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করে দেন। তারপরও তিনি থেমে থাকেন নেই। অল্প সময়ের মধ্যে নতুন চ্যানেল ক্রিয়েট করে আবার ক্লাস আপলোড করা শুরু করেন। সেই চ্যানেলটিতে বর্তমানে প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজারের মতো সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। আর তার ফেসবুক প্রোফাইলে রয়েছে প্রায় দুই লক্ষাধিক এবং ম্যাজিক ইংলিশ লার্নিং স্কুল এই পেজেও আছে প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক ফলোয়ার্স। উক্ত পেজের নামে রয়েছে গ্রুপ, যেখানে রয়েছে লক্ষাধিক মেম্বারস।

করোনাকালীন সময় হঠাৎ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি মনোনিবেশ করেন বই লেখার প্রতি। যে বইটির নাম করণ করেন, ম্যাজিক ইংলিশ স্পোকেন এন্ড রিটেন। যা ইতোমধ্যে হাজার হাজার কপি অনলাইনে সেল হয়েছে।

এখন এই বইটিকে ফলো করে তিনি অনলাইনে অনেকগুলো কোর্স করাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৩৭টির বেশি দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা তার অনলাইন কোর্সে ইংরেজি শিখছেন। তাই নতুন করে আবার শুরু করেছেন উক্ত বইয়ের উপর অসংখ্য টিচার তৈরি করার প্রয়াস। যাতে করে আরো মানুষের মাঝে সহজে ইংরেজি শিখার পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

সেই লক্ষ্যে বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছেন দুর্বার গতিতে। কারণ তিনি বলেন, সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়তে ইংরেজি শিখার কোনো বিকল্প নেই। সুন্দর একটি ক্যারিয়ার বিল্ডাআপ করা মানে পরিবার সমাজ তথা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর একটি কথা না বললেই নয়, শুধু শিক্ষক হিসেবে নয়, পিতা হিসেবেও গর্বিত দুজন সন্তানের জনক। তার সন্তানদের নাম পর্যায়ক্রমে মাহি,মাহদী।

এর মধ্যে মাহদী হাসান (ছোট সেকেন্ড আজহারী) নামে কোটি মানুষের কাছে পরিচয় লাভ করেছেন। যার বিভিন্ন লেকচার কোটি কোটি মানুষ ফেসবুকে দেখেছেন। পরিশেষে তিনি বলেন, এইসব কিছু অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বাবা মায়ের দোয়া, মানুষের ভালোবাসা, সাপোর্ট ও আল্লাহর অশেষ কৃপায়।

বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর