আম্ফানে পড়া গাছ কাটার টেন্ডার নিয়ে জীবিত ও শুকনা গাছ কাটার অভিযোগ!

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে আম্ফান ঝড়ে উপড়ে পড়া বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তনের টেন্ডার নিয়ে অর্ধকোটি টাকার জীবিত ও শুকনা গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে সাজেদুল ইসলাম ওরফে সাজু নামে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

তিনি উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়নের কুলিয়া দুর্গাপুর এলাকার মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের ছেলে ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে পরিচয় দানকারী।

জানা যায়, এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারী ০৫.৪৪.৮৭৪৭.০০০.২৬.০০১.২১-১৮৪ নং স্মারকে জেলার কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রনাধীন কালিগঞ্জ আরএইচডি-নকিপুর জিসি ভায়া নাজিমগঞ্জ এবং রতনপুর জিসি সড়কে আম্ফান ঘূর্ণি ঝড়ে উপড়ে পড়া বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সমূহ নিলামে বিক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।

এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি নিলামে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকায় উপড়ে পড়া গাছ কর্তনের টেন্ডার নেয় সাজেদুল ইসলাম সাজু। যা ৩০ দিনের মধ্যে যাবতীয় গাছসমূহ নিজ দায়িত্বে ও খরচে অপসারণ করিতে হবে। তানাহলে কর্তৃপক্ষ সমূদয় টাকা বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ পত্রে উল্লেখ রয়েছে।

অথচ প্রশাসনের সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে ঠিকাদার সাজেদুল ইসলাম সাজু আজও পর্যন্ত জীবিত ও মরা গাছ কর্তন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যা ইতিমধ্যে উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদীর ব্যক্তিগত সহকারি এই সাজেদুল ইসলাম সাজু। যার দখলে রয়েছে উপজেলার প্রতিটি অফিস।

উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী সাজুকে দিয়ে আম্ফানে উপড়ে পড়া গাছ গুলো টেন্ডার নিয়েছেন। খাতা কলমে সাজুর নামে থাকলেও পেছনে রয়েছে সাঈদ মেহেদী। এক সময়ে সাজুর বাবা বাড়িতে টিউশনি করে সংসার চালাতো।

সেই সাজু কয়েক বছরে বহু টাকার মালিক। রয়েছে আলিশান বাড়ি ও গাড়ি। হঠাৎ সাজুর কোটিপটি বনে যাওয়া দেখে হতবাগ হয়েছি আমিসহ উপজেলার মানুষ।

তিনি আরও বলেন, নাজিমগঞ্জ থেকে রতনপুর পর্যন্ত অসংখ্য জীবিত গাছ বিভিন্ন সময়ে কেটে নিয়েছে সাজুসহ তার লোকজন। গতকাল গাছ কাটার সময় আমি বাঁধা দিয়েছি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও বরাবরের মত রিসিভ হয়নি।

পরবর্তীতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যোগদানের পূর্বেই এগুলো টেন্ডার হয়েছে। সেজন্য আমার নলেজে নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবো এবং সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কবরো।

এদিকে ঠিকাদার সাজেদুল ইসলাম সাজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি টেন্ডারের বাইরে একটি গাছও কাটেনি। যদি কোন প্রমাণ থাকে তাহলে আপনারা আমার ছবিসহ নিউজ করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর কাছে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ/বার্তা বাজার/এসবি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর