অলিম্পিকে ইসরায়েলের বিপক্ষে না খেলে দেশে ফেরা ফেথি এখন ‘মহানায়ক’

গত ২৩ জুলাই টোকিও অলিম্পিকের আসরে ফিলিস্তিনের ওপর নির্মম অত্যাচার করা ইসরায়েলের বিপক্ষে না খেলে মুসলিম ভাতৃত্ববোধের অনন্য নজির স্থাপন করেছেন আলজেরিয়ান জুডোকা ফেথি নুরিন। ফিলিস্তিনের প্রতি নিজের স্পষ্ট সমর্থনের কথা জানিয়ে, জুডো ইভেন্টে ইসরায়েলের প্রতিপক্ষকে বয়কট করেছেন আলজেরিয়ার এ জুডোকা।

অলিম্পিকে প্রতিপক্ষ ইসরায়েলের হওয়ায় স্বেচ্ছায় নিজের নাম সরিয়ে নেয় নুরিন। তার দেখাদেখি ইসরায়েলের তোহারের বুটবুলের বিপক্ষে খেলেননি সুদানের জুডোকা মোহাম্মদ আব্দুল রাসুলও। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে অলিম্পিক ছেড়ে দেশে ফেরার এখন প্রশংসায় ভাসসছেন নুরিন।

অলিম্পিক থেকে না খেলেই দেশে ফেরা নুরিন আলজেরিয়ায় নেমেছেন গত বুধবার রাতে। দেশে ফেরার পর আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে সবাই প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন নুরিনকে। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানেই পাচ্ছেন বীরের সম্মান। যা দেখে অনেকেরই হয়তো মনে হতে পারে, কোনো পদক জিতেছেন নুরিন! কোনো পদক হয়তো জেতেননি নুরিন। কিন্তু বিশ্ব মঞ্চে নির্যাতিত ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানানোর বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই তিনি নিয়েছেন। জুডোতে ৭৩ কেজি শ্রেণিতে প্রথম রাউন্ডে জিতলে, দ্বিতীয় রাউন্ডে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে আসতো ইসরায়েলের তোহার বুটবুলের নাম। যা দেখে তৎক্ষণাৎ না খেলার সিদ্ধান্ত নেন নুরিন।

দেশে ফিরে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘যখন দেখলাম ঐ জিওনিস্ট রাজ্যের খেলোয়াড়ের সঙ্গে ড্রতে আমাকে একই সঙ্গে রাখা হয়েছে, থমকে গিয়েছিলাম। এমন কিছু হবে ভাবতেই পারিনি। তবে এটা দেখার পর না খেলার সিদ্ধান্ত নিতে আমার এক মুহূর্তের জন্যও সংশয় কাজ করেনি।’

ইসরায়েলি প্রতিপক্ষকে বয়কট করায় আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশনের সাময়িক নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন ফেথি নুরিন ও তার কোচ। কিন্তু এতে তাদের কোনো আফসোস নেই। বরং ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে পারায় গর্বিত এ আলজেরিয়ান জুডোকা। তাকে নিয়ে গর্ব করছে আলজেরিয়ার মানুষরাও।

নুরিন বলেন, ‘কোচের সঙ্গে মিলে এ সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গর্ব হয় আমার। এটি আমাকে, আমার পরিবারকে, আলজেরিয়ার মানুষ আর আমার দেশটাকে সম্মান এনে দিয়েছে। আমাদের প্রেসিডেন্ট আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, আমরা এই ব্যাপারগুলোকে স্বাভাবিকীকরণের সঙ্গে একমত নই, আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষেই আছি।’

এ সিদ্ধান্ত নিয়ে নানান জায়গা থেকে প্রশংসা শুনতে পাচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভালো লাগছে যে ঐ জিওনিস্ট রাজ্যটাকে একটু খেপিয়ে দিতে পেরেছি। আরব ও মুসলিম বিশ্ব থেকে প্রশংসা জানানো অনেক ফোন কলও পেয়েছি এ কারণে।’

বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর