“নাই” দিয়ে চলছে হাসপাতাল!

নাই দিয়ে চলছে তিন লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চিকিৎসাস্থল কুড়িগ্রামের রৌমারী হাসপাতাল। আবাসিকে ডাক্তার নাই, এক্সরে- টেকনিশিয়ান নাই, এনেস্থেসিয়া এক্সর্পাট নাই, ল্যাব টেকনিশিয়ান নেই,এম্বুলেন্সের ড্রাইভার নাই, প্যারামেডিকেল ডাক্তার নাই, পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা নাই, প্রয়োজনীয় ওষুধ নাই, নৈশ প্রহরী নাই, নার্স ও ওর্য়াড বয় নাই, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য আলাদা কেবিন নাই।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা এমন শতাধিক নাই শব্দ ছাড়া আর কিছুই পান না বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে হাসপাতালে দেখা যায়, কোটি টাকার উন্নতমানের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, একই অবস্থা অপারেশন থিয়েটারের। গাইনী ডাক্তার ও এনেস্থেসিয়া এক্সপার্ট না থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। বর্হি বিভাগে রোগী দেখছেন চারজন ডাক্তার, রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেখানে সামাজিক দুরত্বের কোন বালাই নেই।

রৌমারী হাসপাতালের সিনিয়র অফিস সহকারি আব্দুস সাত্তার জানান, দীর্ঘদিন থেকে রৌমারী হাসপাতালের ডাক্তারসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ৬২ টি পদ ফাকা রয়েছে। এর মধ্যে ডাক্তার ২৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন, ডেন্টাল সার্জন নাই, কনসালটেন্ট ৫ জনের জায়গায় একজনও নাই।

নার্স ২০ জনের জায়গায় আছেন ৮ জন। অপারেশন থিয়েটারের এনেস্থেসিয়া এক্সপাট নাই, ল্যাব টেকনেশিয়ান নাই, এক্সরে টেকনিশিয়ান নাই, এছাড়াও তুতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদ ফাকা রয়েছে ১৭ টি, চতুর্থ শ্রেণীর ১৩ টি, নৈশ প্রহরী একজনও নাই।

চিকিৎসা নিতে আসা ইজলামারী গ্রামের শাহিন আহম্মেদ বলেন, দুই ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে যদিও ডাক্তারের দেখা পেলাম কিন্তু ওষুধ যা লিখেছেন তা বাইরে থেকে কিনতে হবে। হাসপাতালে শুধু নাই আর নাই।

বন্দবেড় গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের এক্সরে টেকনিশিয়ান না থাকায় বাইরে থেকে এক্সরে করতে হচ্ছে।

রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যাহ বলেন, জেলা শহর হতে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন উপজেলা রৌমারী। এ উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র রৌমারী হাসপাতাল।

জনবল সংকটে সে নিজেই রুগ্ন হয়েয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, গাইনী ডাক্তার না থাকায় প্রসূতি মায়েদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করি।

জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বার্তা বাজারকে বলেন, জনবল সংকট নিরসনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি।

সরকারি লোক নিয়ে আসা কঠিন হলেও আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করণের ঘোষনা হলেও এখন পর্যন্ত ৫০ শয্যার চাহিদা অনুযায়ী কোন বরাদ্দ পাইনি।

ইয়াছির আরাফাত নাহিদ/বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর