কোরবানিতে অবিক্রীত গরু এখন গলার কাঁটা!

করোনার কারনে এবার কোরবানিতে তেমন গরু বেচা-কেনা হয়নি। ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে খামারী ও গরু ব্যবসায়ীদের। সব চেয়ে বেশি লোকসান গুনতে হয়েছে ধার-দেনা ও সুদের টাকায় গরু ব্যবসায়ীদের। অবিক্রীত গরু এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু ব্যবসায়ীরা না আসা ও গরু ঢাকাতে পাঠাতে না পারায় এ লোকসানের কারন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (২৬ জুলাই) দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ গরুর হাট পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া হাটে লকডাউনের মধ্যেও ক্ষতি পোষাতে গরু নিয়ে এসছে ব্যবসায়ী ও খামারীরা। তবে তুলনামুলক বেচা-কেনা নেই হাটে।

অপরদিকে হাটে স্বাস্থ্য বিধি মানতে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইজারাদার। মাস্ক ছাড়া কাউকে হাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও বিনামূল্যে মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার বিরতণ করেন কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম ফয়সাল আহম্মেদ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার কারনে এবার কোরবানির হাটে সাতক্ষিরা, যশোর, খুলনা, মাদারী, ফরিদপুর, চাঁদপুর, লক্ষীপুর, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু- মহিষ ব্যবসায়ীরা আসতে পারেনি। হয়নি তেমন গরু বেচা-কেনা। এতে করে বিপাকে পড়েছেন পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ছোট- মাঝারি গরু ব্যবসায়ী ও খামারীরা। এ কারনে কোরবানিতে অবিক্রীত গরু বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা।

ভোলা জেলা থেকে হাটে আসা গরু বিক্রেতা মো. আয়নাল ব্যাপারী বলেন,‘ এবার আমাগো অনেক লস হয়েছে। কোরবানির জন্য কেনা ১০টি গুরুর ৪টি বিক্রি করছিলাম। তাতে ৭০হাজার টাকা লস হয়েছে। বাকি ৬টি আজকে হাটে নিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত ১টিও বিক্রি করতে পারিনি।

স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহে কোরবানি উপলক্ষ্যে ২৩টি গরু ঢাকার হাটে পাঠানো জন্য কিনে ছিলাম। ট্রাক না পাওয়ায় পাঠাতে পারি নি। এতে বড় লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। সেই গরু আজ হাটে নিয়ে এসেছি। ১১টা বিক্রি করেছি।

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার মো. ইয়াছিন মাঝি বলেন,‘অধিক লাভের জন্য গত এক বছর তিনটি গরু মোটাতাজা করেছি। খরচ হয়েছে ৭লাখ টাকা। কোরবানিতে গরু বিক্রি না হওয়ায় গরু গুলো এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার বিলিবিলাস গ্রামের গরু খামারী মো. হাবিব বলেন,‘ করোনার কারনে গরুর বাজার মূল্য প্রতিবারের চেয়ে অনেক কম ছিল। যার কারনে আমাদের ক্ষতি হয়েছে।

এবিষয়ে কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম ফয়সাল আহম্মেদ বলেন,‘ কালাইয়া গরু –মহিষের হাটি দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে বৃহত্তম হাট। এ হাটে চট্রগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা হাটে আসে। তারা গরু মহিষ কিনে নিয়ে যায়। করোনার কারনে সারাদেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন থাকায় তারা আসতে পারেনি। যার কারনে বেচা-কেনা কম।

এতে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের গরু-মহিষ ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়েছেন। অনেক ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কোরবানির হাটে অবিক্রীত গরু মহিষ নিয়ে বাজারে আসেছেন। আমি ব্যক্তিগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার বিতরণ করেছি। সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে অনুরোধ করছি।

বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর