কেরানীগঞ্জে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জে নানা অজুহাতে বের হচ্ছে মানুষ। লকডাউনের ৩য় দিনে উপজেলায় মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। সড়ক ও মহাসড়কে বেড়েছে মানুষের চলাচল।

রোববার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

স্থানীয় হাট বাজার গুলোতে ছিল না স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই। মাস্ক ছাড়াই গাদাগাদি করে বেচা-কেনা করতে দেখা গেছে। মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি।পরিস্থিতি এমন যে, সেখানে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীও তেমন একটা ব্যবহার করতে দেখা যায়নি বাজারগুলোতে।

এদিকে কঠোর অবস্থানে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। প্রথম দিন থেকেই বেশ তৎপর থাকতে দেখা গেছে তাদের। সার্বক্ষনিক মোবাইল কোটের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দেয়া হচ্ছে জরিমানা ও কারাদণ্ড। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহলের পাশাপাশি বিভিন্ন মোড় ও পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন । তবুও মানছেনা কোন বিধিনিষেধ।

দিনের বেলায় কঠোরতা পরিলক্ষিত হলেও রাতের চিত্র ভিন্ন। অনেকই মানছে না সরকারি নিষেধাজ্ঞা। এমনকি মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে বহু মানুষকে। আর মাস্ক থাকলেও তা না পরে থুতনিতেই জুলিয়ে রেখে দিচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে মানুষেকে জড়ো হয়ে আড্ডা দিতে দেখা গেছে।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে মাঠে উপজেলা প্রশাসন কাজ করলেও সাধারণ ক্রেতারা তা আমলে নিচ্ছেনা। এতে প্রশাসনের নজরদারি আরো বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন সুধীমহল। সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা না হলে কেরানীগঞ্জে করোনা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

রিয়াজ উদ্দিন নামে ব্যক্তি জানান, ম্যাজিষ্ট্রেট আসলেই সবাই খবর পেয়ে দোকা্-পার্ট দ্রুত বন্ধ করে ফেলে। মানুষজন পালিয়ে যায়। ম্যাজিষ্ট্রেট চলে গেলেই আবার সব কিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এরকম চোর-পুলিশ খেলা করলে তো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমানো যাবে না। নিজদেরই ক্ষতি তাই সবাইকে নিজে থেকে সচেতন হতে হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেব নাথ বার্তা বাজারকে বলেন, দুই সাপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ বাস্থবায়নে উপজেলা প্রশাসন প্রথম দিন থেকেই প্রায় প্রতিদিনই মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কেরানীগঞ্জ যেহেতু বড় একটি উপজেলা তাই পুরো উপজেলাকে আমিসহ আরও দুইজন এসিল্যান্ড মিলে তিনটি জোনে ভাগ করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোবাইল কোটের অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। যে সব এলাকায় জনসমাগম বেশি রয়েছে সে এলাকা গুলোতে প্রশাসনিক নজরদারী আরো বাড়ানো হয়েছে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে নজরদারী আরো বাড়ানো হবে।

এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। গত দুই দিনে আমরা প্রায় দেড়শটির মতো মোবাইল কোর্টের মামলা করেছি। যেখানে জেল- জরিমান করা হয়েছে। সবাই নিজে থেকে সচেতন না হলে জেলা জরিমানা করে করোনার সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‍্যাব কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কেউ বাহিরে বের হলে উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে তাকে যেতে দেয়া হচ্ছে। অকারণে বাহিরে বের হলে তাদেরকে মামলা দেয়া হচ্ছে। আর বাজারগুলোতে যেনো স্বাস্থ্যবিধি মান হয় এ ব্যাপারে বাজার কমিটিগুলোকে বলা হয়েছে। তারপরও যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে আমরা তাদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।

রানা আহমেদ/বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর