ইভ্যালিকে সরকারের শোকজ, ১ আগস্টের মধ্যে দিতে হবে জবাব

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম অর্থ নেওয়ার পর তা কি করছে, ভবিষ্যতে ওই অর্থ পরিশোধ করতে পারবে কি না ও কিভাবে পরিশোধ করবে তা সহ মোট ৬টি প্রশ্নের ব্যাখ্যা চেয়েছে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে দেওইয়া নোটিশে ইভ্যালির আর্থিক ত্রুটির বিষয়টি উল্লেখ করে গ্রাহক-মার্চেন্টদের সুরক্ষায় কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ হবে না সে বিষয়ে আগামী ১লা আগস্টের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার (১৯ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও এমডি মোহাম্মাদ রাসেলের ঠিকানা বরাবর এই নোটিশ পাঠানো হয়।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, প্রতিষ্ঠানটির কাছে গ্রাহক-মার্চেন্টদের যে দায় রয়েছে, সে তুলনায় সম্পদ কম রয়েছে। বাকি অর্থ তাদের কাছে আছে কি না? থাকলে তারা কীভাবে বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা করেছে- এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

শোকজ নোটিসে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যচ্ছে, ইভ্যালি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ গ্রহণ করলেও যথা সময়ে পণ্য সরবরাহ করছে না। যেসব মার্চেন্টের কাছ থেকে পণ্য গ্রহণ করা হয়েছিল তাদেরও অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের কার্যক্রমে বিপুল সংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, ইভ্যালিকে দেওয়া শোকজ নোটিসে ছয়টি বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- (১) গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের মোট দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কারণ কী? অবশিষ্ট টাকা প্রতিষ্ঠানটির কাছে আছে কি না? থাকলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য অথবা না থাকলে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে হবে;

(২) এ বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রাহকের মোট দায়ের পরিমাণ কত, গ্রাহকের কাছ থেকে গৃহীত অর্থের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য প্রদানের বর্তমান অবস্থা এবং এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা;

(৩) ১৫ জুলাই পর্যন্ত মার্চেন্টদের কী পরিমাণ দায় সৃষ্টি হয়েছে, তা পরিশোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা;

(৪) ব্যবসা শুরুর পর থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ইভ্যালি গ্রাহকের কাছ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করেছে, মার্চেন্টদের কী পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করেছে এবং প্রশাসনিক ও অন্যান্য খাতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ;

(৫) ইভ্যালির ব্যবসার পদ্ধতি এবং বর্তমান অবস্থা হতে উত্তরণের পরিকল্পনা এবং (৬) ডিজিটাল কমার্স পলিসি ২০২০ (সংশোধিত) এবং ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনো বিজনেস পলিসি কার্যক্রম ইভ্যালিতে এখনো রয়েছে কি না, থাকলে তা কী সে বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ৪ জুলাই পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রাহক ও মার্চেন্টের কাছ থেকে নেওয়া ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে টাকা আত্মসাৎ কিংবা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর