কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ব্র্যাকের নারী কর্মীকে চাকুরীচ্যুত!

নীলফামারীর ডোমারে অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় ব্র্যাকের এক নারী কর্মীকে চাকুরীচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ( ১৬ জুলাই) বিকেলে জেলা শহরের মড়াল সংঘ মোড়স্থ মিডিয়া হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে জেলা মহিলা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ব্র্যাকের ডোমার উপজেলার মিরজাগঞ্জ শাখায় ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমে ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন মৌসুমী দাস (৩৯)। সংস্থাটিতে টানা ১৫ বছর যাবৎ কর্মরত থেকে ওই শাখায় ব্যবস্থাপক পদে তিনি কাজ করছেন পাঁচ বছর ধরে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ১৪০০ টাকা গরমিলের অভিযোগে চলতি বছর ২৪ জুন চাকুরীচ্যুত করা হয় তাকে।

সংবাদ সম্মেলনে চাকুরীচ্যুত মৌসুমী দাস বলেন, আমি সেখানে পাঁচ বছর ধরে কাজ করছি। বর্তমান এলাকা ব্যবস্থাপক এই শাখায় এসেছেন এক বছর নয় মাস আগে। তিনি সেখানে যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে আমাকে হেনস্তা করা শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে আমাকে রাতে অফিসে ডাকতেন। তার অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না পেয়ে আমাকে চাকুরীচ্যুতি করার মিশনে নামেন তিনি ।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে একই দিনে সে অভিযোগ আরেক কর্মীর বিরুদ্ধেও আনা হয়েছে। অথচ ওই কর্মীর চাকুরী বহাল থাকলেও এই করোনাকালীন সময়ে আমাকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। চাকরী হারিয়ে আমি যে সময়ে পরিবার নিয়ে দিশেহারা অবস্থায়, সে সময়ে এলাকা ব্যবস্থাপক নাজমুল হক আমাকে ওই এলাকা থেকে বিতাড়িত করার নানা হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি আমার বিরুদ্ধে ডোমার থানায় একটি জিডিও করেছেন।

জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি দৌলত জাহান ছবি অভিযোগ করে বলেন, এলাকা ব্যবস্থাপক নাজমুল হক একজন মারাত্মক নারী বিদ্বেষী ব্যক্তি। বিভিন্ন সময়ে তার অধিনস্ত নারী কর্মীরা তার মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। সেই হেনস্তা থেকে বাদ পড়েননি মৌসুমী দাস। তাকে বিভিন্ন সময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি।

এতে সাড়া না পেয়ে মাত্র ১৪০০ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ওই টাকা জমা নিয়ে ক্ষমা প্রার্থণা চাওয়ার পরও চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে তাকে। একই সময়ে ওই কার্যালয়ে মৌসুমী দাসের সঙ্গে আরেক নারী কর্মীর নামেও ২ হাজার টাকার আর্থিক গরমিলের অভিযোগ আনা হলে তিনি টাকা জমা করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। অথচ একই অভিযোগে ওই নারী কর্মীর চাকুরী বহাল থাকলেও চাকুরীচ্যুত হন মৌসুমী দাস।

তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে বিষয়টি আসার পরে আমরা সরেজমিনে অনুসন্ধান শুরু করি। এতে নাজমুল হকের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ বেরিয়ে আসতে থাকে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি মহসেনা বেগম, আইন বিষয়ক সম্পাদক আফরোজ আরা।

এলাকা ব্যবস্থাপক নাজমুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন ওই শাখা ব্যবস্থাপকের আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি আমাদের মনিটরিং সেলের কাছে ধরা পরে।

এরপর তিনি দোষ স্বীকার করে কার্যালয়ে টাকাও জমা করেছেন। যে কোনো কর্মীর চাকুরীচ্যুতির বিষয়ে প্রধান কার্যালয় থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার বিষয়েও প্রধান কার্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ব্যাপারে আমার কোনো হাত নেই। বিভিন্ন সময়ে মৌসুমী দাসকে অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।

বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর