কোহলিদের সেনা-টুপি নিয়ে আইসিসিকে নালিশ পিসিবির

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর ক্ষোভ আগেই জানিয়েছিলেন। এ নিয়ে টুইট করেছিলেন পাকিস্তানের এক সিনিয়র সাংবাদিকও। এবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি) জানাল, ভারতীয় ক্রিকেট দলের মাথায় সেনা-টুপি তাদেরও ভালো লাগেনি। বিষয়টি নিয়ে পিসিবি স্বচ্ছ ও শক্ত অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের সভাপতি এহসান মানি। আইসিসিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বানও জানিয়েছেন এক মেয়াদে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা এই ক্রিকেট কর্তা।

ক্রিকেটারদের মাথায় প্রথাগত ক্রিকেটীয় টুপি নয়, সেনাবাহিনীর টুপি। রাঁচিতে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে এমন টুপি পরে মাঠে নেমেছিল ভারত। কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ভারতীয় জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রথাগত টুপি ছেড়ে সেনাদের টুপি পরেছিল ভারতীয় দল। এ ছাড়া দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার রাঁচির ম্যাচ ফি তুলে দিয়েছেন জাতীয় প্রতিরক্ষা তহবিলে। এই তহবিলের টাকা ব্যয় করা হয় ভারতীয় সেনাদের পরিবারের দেখাশোনা এবং তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সম্মানসূচক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে থাকা এম এস ধোনি টসের আগে সতীর্থদের এই টুপি সরবরাহ করেছিলেন।

এ ব্যাপারে কাল পিসিবি চেয়ারম্যান মানি বলেছেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে আইসিসির কাছে উপস্থাপন করেছি। এ ব্যাপারে আইসিসিতে আমাদের অবস্থান নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। আমরা বিশ্বাস করি, ক্রিকেট এবং খেলাধুলাকে রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করা উচিত নয়। এটা আমরা পরিষ্কারভাবেই বলেছি। ক্রিকেট বিশ্বে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা ভয়াবহভাবে তলিয়ে গেছে। আমরা এ ব্যাপারে স্বচ্ছ ও সুদৃঢ় অবস্থান নিচ্ছি। আমরা রাজনীতি করি না। ক্রিকেটকেও আমরা রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করি না।’

পুলওয়ামায় সৈনিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কে আবার টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এর উত্তাপ গিয়ে লেগেছে ক্রিকেটে।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এর আগে জানিয়েছে, এই উদ্যোগ নেওয়ার আগেই আইসিসির কাছ থেকে তারা অনুমতি নিয়ে রেখেছিল। আইসিসি এটিকে দাতব্য উদ্যোগ হিসেবে দেখেছে। যদি পিসিবির দাবি, এটি দাতব্য নয়, রাজনৈতিক অবস্থান। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আইসিসি সভাপতির দায়িত্ব পালন করা মানি বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছেন।

বিসিসিআইয়ের ওপর চাপ আছে ক্রিকেট বিশ্বে পাকিস্তানকে একঘরে করার উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে। গত বৃহস্পতিবার বিসিসিআইয়ের প্রশাসনিক কমিটির প্রধান বিনোদ রাই সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আইসিসির কাছে গিয়েছিলেন। যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদকে মদদ দেয়, আইসিসি যেন সেই দেশগুলোকে বহিষ্কার করে। বিসিসিআই এই আরজি জানিয়ে রেখেছে। ভারতের অনেকেই আবার বিশ্বকাপে ভারত যেন পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলে, এ ব্যাপারেও চাপ দিচ্ছে। বিনোদ রাই এ বিষয়েও এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে নন।

ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের বিপক্ষে আইসিসিতে ভারতের এই অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতেই এবার পিসিবি পাল্টা অবস্থান নিল। পিসিবির দাবি, দাতব্যকাজের কথা বলে ভারত আইসিসির অনুমতি নিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত এটি আর দাতব্যকাজ হয়ে থাকেনি। সামরিক টুপি কখনো দাতব্যকাজের প্রতীক হতে পারে না। আইসিসির আচরণবিধিতে স্পষ্ট করে বলা আছে, রাজনীতি, ধর্মীয় ও বর্ণবাদী কোনো কাজে ক্রিকেটকে ব্যবহার করা যাবে না। খুব সম্প্রতি এই আচরণবিধি ভাঙার অপরাধে ইমরান তাহির, মঈন আলীরা শাস্তির মুখে পড়েছেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর