স্ত্রীর দেয়া গরম তেলে ঝলসে দেয়া সেই স্বামীর মৃত্যু

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী দেয়া ‘গরম তেলে’ঝলসে যাওয়া স্বামী সেই দিদার হোসেনের (৩২) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। দশদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢামেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত দিদার হোসেন সদর উপজেলার চর রুহিতা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন।

এর আগে গত ১৭ জুন সোমবার পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামী দিদার হোসেনের গায়ে গরম তেল ঢেলে দিয়ে প্রথম স্ত্রী জহুরা বেগম ঝলসে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। এ জন্য ভুক্তভোগীর পরিবার প্রথম স্ত্রী জহুরা বেগম ও তার ভাই আলমগীরকে দায়ী করেন। ঘটনার দিনই দিদারের মা ভানু বেগম বাদী হয়ে স্ত্রী জহুরা বেগম ও ভাই আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার দিন দিদারের বড় ভাই আকবর হোসেন জানান, ২০০৩ সালে সদর উপজেলার চর রমনী মোহন গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে জহুরার সাথে দিদারের বিয়ে হয়। পরে পারিবারিক বিবাদে ২০১৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর দুইজনই অন্যত্র বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন।

এক বছর আগে দিদার জহুরাকে ফের বিয়ে করেন। পরে তারা লক্ষীপুর শহরে একটি বাসা ভাড়া করে থাকেন। ওই দিন সকালে পারিবারিক কলহের জের ধরে জহুরা ও তার ভাই আলমগীর গরম তেল ঢেলে দেয় দিদারের গায়ে। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

মামলা সূত্র জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটনার দিন জহুরা ও তার ভাই আলমগীর গরম তেল ঢেলে দিদারের শরীর ঝলসে দেয়। এতে তার মুখ-হাত ও বুকসহ শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে যায়। দগ্ধাবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, দিদার ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ঘটনার পর থেকে জহুরা ও তার ভাই আলমগীর পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গরম তেল দিয়ে ঝলসে দেয়ার মামলাটি এখন হত্যা মামলার ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর