আপনিও কি মিন্নির সঙ্গে একমত?

বরিশালের বরগুনায় রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ্যে এমন হত্যাকাণ্ডের সময় স্ত্রী ছাড়া রিফাতকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ নিয়ে হাইকোর্ট পর্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।বিভিন্ন গণমাধ্যমে চাউর হচ্ছে খুনির সঙ্গে নিহত রিফাতের স্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে।এবার সেই মিন্নি রিফাত হত্যার জন্য নয়ন বন্ডের ফাঁসি চেয়েছেন।তার এই দাবির সঙ্গে আপনিও কি একমত?

বুধবার (২৬ জুন) এ হত্যাকাণ্ডের সময় রিফাতের পাশেই ছিলেন তার নববধূ আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। তিনি খালি হাতেই খুনিদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এ সময় হামলাকারীদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়েছে। কিন্তু স্বামীর মৃত্যু ঠেকাতে পারেননি। মিন্নি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু ফিরাইতে পারি নাই।’

বুধবার সকালের ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি অনেক চেষ্টা করেও তার স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি।

সেই নৃশংস ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কলেজ দিয়ে বের হইছি, ও (রিফাত) আমার সঙ্গে ছিল। তখন কিছু পোলাপান আইসা কী জানি বলা শুরু করছে, ‘গালি দিছো ক্যান, গালি দিছো ক্যান?’ এ রকম জানি কী…। পরে আরও দু-তিনটা ছেলে আইসা কোপান শুরু করছে। আমি অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু ফিরাইতে পারি নাই।’

আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চেয়ে বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর মৃত্যুর বিচার চাই।আমি নয়নের ফাঁসি চাই।আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই দাবি, ইনও নারী আমিও নারী।আমি নয়নের ফাঁসি চাই।’

মিন্নি আরও বলেন, ভিডিওতে যাদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মূলত তারাই প্রথমে রিফাত ও আমার পথ আটকে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে তিন-চারজন রিফাতকে মারতে শুরু করেছিল। নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী চাপাতি দিয়ে রিফাত শরীফকে কোপাতে শুরু করলে তারা পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছিল। এর পর আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেও রিফাত শরীফকে বাঁচাতে পারিনি।

প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

নিহতের পরিবার জানায়, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যায় অংশ নেয় নয়ন বন্ডসহ ৪-৫ জন। রিফাতের সঙ্গে দুই মাস আগে পুলিশলাইন সড়কের আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিয়ে হয়। বিয়ের পর নয়ন মিন্নিকে তার প্রেমিকা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিতে থাকে।

রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে নয়ন তার দলবল নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে যারা দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর