জান্নাতির সন্ধানে পাগলপ্রায় বাবা আব্দুল জলিল

রাজধানীর মিরপুর থেকে গত বুধবার (২৩ জুন) হারিয়ে যায় ১৫ বছরের কিশোরী জান্নাতি। বাসা থেকে শ্যাম্পু কেনার জন্য বের হয়ে সে আর আর ফেরত আসেনি। তার সন্ধানে পুলিশ, র‍্যাবসহ গণমাধ্যমকর্মীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা আব্দুল জলিল।

জানা যায়, ২ ছেলে ও এক মেয়ের জনক আব্দুল জলিলের বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। মিরপুরের সেনাপাড়া এলাকায় ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন তিনি। নিজে প্রাইভেটকার চালিয়ে ও স্ত্রী পরের বাসায় কাজ করে সন্তানদের মানুষ করছেন।

অভাবের সংসারে মেয়ে জান্নাতি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বয়স ১৫ হলেও রোগের কারণে দৈহিক গড়ণে বেশ ছোট ছিল মেয়েটি। পড়াশোনা করতো স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। প্রতি দুই মাস অন্তর মেয়েকে দিতে হয় রক্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছিল তার চিকিৎসা।

গত বুধবার (২৩ জুন) তিনি চলে যান কাজে। স্ত্রী রত্নাও কাজের সুবাধে বাসায় ছিল না। ছেলে দু’জন অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে থাকার সময় গোসলের আগে জান্নাতি বাসা থেকে বের হন শ্যাম্পু কিনে আনতে। এরপর আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখোঁজি শেষে ওইদিনই কাফরুল থানায় জিডি করেন আব্দুল জলিল। পাশের একটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মিরপুরের বিআরটিএর দিকে হেঁটে যাচ্ছে জান্নাতি।

মেয়ের ছবি হাতে আব্দুল জলিল। ছবি- বার্তা বাজার

 

মিরপুর-১০ নাম্বার গোলচত্তরে বার্তা বাজারের এই প্রতিনিধির দেখা হয় আব্দুল জলিলের সাথে। সংবাদকর্মী জেনেই হাউমাউ করে মেয়েকে ফিরিয়ে এনে দেওয়ার আকুতি জানান তিনি। তার কান্না শুনে আশেপাশের অনেক মানুষ জড়ো হয় সেখানে।

আব্দুল জলিল জানান, আমার একটা মাত্রই মেয়ে। ও হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমার ঘরের চুলায় আগুন জ্বলে না। থানায় জিডি করেছি। র‍্যাবের কাছেও অভিযোগ করেছি। ইতোমধ্যে র‍্যাব আমাদেরকে ডেকে নিয়ে আশ্বাসও দিয়েছেন মেয়েকে ফিরিয়ে আনার।

তবে মেয়েকে হারানোর পরে প্রতারণার শিকার হতে যাচ্ছিলেন বলেও তিনি জানান। জান্নাতির বাবা জানান, ফেসবুকে হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি দেখে এক লোক আমাকে ফোন করে বলে আমার মেয়েকে পাওয়া গেছে। গাজীপুর থেকে তাকে নিয়ে মিরপুর আসছে। ১ হাজার টাকা ভাড়া বাবদ বিকাশ করতে বলে।

তিনি বলেন, আমিও তার কথামত সরল বিশ্বাসে টাকা পাঠাতে যাচ্ছিলাম। তখন আমার ছেলে আমাকে নিয়ে দ্রুত থানায় যায়। গিয়ে পুলিশকে জানানোর পরে তারা গাজীপুরের ওই ব্যক্তি সাথে কথা বলতে চাইলো। পুলিশের পরিচয় জানার পরপরই নাম্বারটা বন্ধ করে দেয় তারা।

দায়ের করা জিডির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে তদন্তের ভার পাওয়া কাফরুল থানার এসআই পরিমল চন্দ্র সরকারের নাম্বারে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে থানার ডিউটি অফিসার জানান, ‘পরিমল সাহেব ছুটিতে আছেন। উনি ছুটি থেকে না আসা পর্যন্ত এটার কাজ স্থগিত থাকবে।’ তবে কবে নাগাদ তিনি ফিরবেন তাও জানাতে পারেননি ডিউটি অফিসার।

জান্নাতির কোনো সন্ধান পাওয়া গেলে নিম্ন ঠিকানায় যোগাযোগের অনুরোধ করা হচ্ছে-

আব্দুল জলিল, মিরপুর। ফোন- ০১৯২৪ ৭৫০৬৫৫
অথবা বার্তা কক্ষ- ০১৮৫৪ ১১২২৪৪

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর