সরকারি খাল ও শ্মশানের জায়গা দখলের অভিযোগ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলম চৌধুরী দিপক এর বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান এর জায়গা ও সরকারি খাল দখল করার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের দিঘীরজান বাজারের পাশে হিন্দুদের শ্মশানের এই জায়গা ও পার্শ্ববর্তী সরকার খাল দখল করার অভিযোগ উঠে এই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে সরেজমিনে জানতে গেলে জীবন কুমার শীল নামের এক ব্যাক্তি বলেন, প্রায় অনেক বছর পুরোনো এই শ্মশানের জায়গাটি জোর করে দখলে নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলম চৌধুরী দিপক মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলেন। এতে আমাদের বাপ দাদাদের শেষ চিহ্নটি মুছে ফেলা হয়েছে । এই শ্মশানে আমরা আমাদের বাপ দাদাদের দাহ করেছি। এখন আমরা আর এখানে কাউকে দাহ করতে পারি না। উনি ভয় দেখিয়ে জোর করে আমাদের শ্মশানের জায়গাটি দখল করে নেয়।

এ বিষয়ে আরেক ব্যক্তি অজয় কুমার চৌধুরী (অঞ্জু) বলেন, তিনি আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই জায়াগাটি দখল করে নেন। ওনার কাছে আমরা গেলে ওনি এই জায়গা সরকার থেকে লিজ নিয়ে আসছে বলে দাবি করেন, কিন্তু এই বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। আমাদের সরকারের কাছে যাওয়ার ক্ষমতাও নাই আমরা সংখ্যায়ও কম। উনার ভয়ে আমরা চুপ হয়ে আছি। এই এলাকার সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রীর কাছে আমরা দাবি জানাই আমাদের এই শ্মশানের জায়গাটি যেন উদ্ধার করে দেন। আমাদের খুব কষ্ট হয়, অনেক দূরে নিয়ে মরদেহ দাহ করতে হয়। আমরা ‌যেন আমাদের শ্মশানে মরদেহ দাহ করতে পারি এই দাবি আমাদের।

এ বিষয়ে ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ধন মিয়া বলেন,আমি দেখেছি এইটা শ্মশান ছিল। এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে মরদেহ এনে দাহ করত।

গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তি বলেন, তিনি যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন এক নায়েবের সাথে তার ভাল সম্পর্ক ছিল। ওই নায়েবের মাধ্যমে ভুয়া কাগজ বানিয়ে এই জায়গাটা দখল করে নেন।

মনিয়ন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর ভূইয়া বলেন,তিনি যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ক্ষমতার জোর খাটিয়ে এই শ্মশানের জায়গাটি ও এর পাশাপাশি সরকারি খাল দখল করে মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলেন।

মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল ভূইয়া বলেন, এই বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসে নাই। যদি এমন কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে, তাহলে এই বিষয়ে আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।

এ বিষয়ে জানতে গেলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, এমন একটি অভিযোগ আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি। মনিয়ন্দ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সরকারি খাল ও হিন্দুদের শ্মশানের জায়গা দখল করে রেখেছেন। আমরা বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে সাথে নিয়ে খতিয়ে দেখছি। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে মাহাবুবুল আলম চৌধুরী দীপকের কাছ জানতে চাইলে তিনি সব কিছু অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ বলে দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, আমি কোন শ্মশানের জায়গা দখল করি নাই। সরকারি জায়গার পিছনে আমার বাবার সম্পত্তি আছে, ওই জায়গায় যাওয়ার জন্য খালের উপর একটি কালভার্ট তৈরি করে রাস্তার জন্য মাটি ফেলেছি। আর এখান শ্মশান ছিল কিনা আমার জানা নাই।

হাসান মাহমুদ পারভেজ/বার্তা বাজার/এফএইচপি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর