‘বি’ইয়া অনলাইন এলএমএস উদ্যোক্তার পাঠশালা’ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি মাইলফলক: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

উদ্বোধন হলো বি’ইয়া অনলাইন লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এলমএস-উদ্যোক্তার পাঠশালার। মঙ্গলবার (২২ জুন) বেলা ৩ টায় অনলাইন জুম প্লাটফর্মে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবসাথপনা পরিচালক ও ইয়ুথ বিজনেস ইন্টারন্যাশনালের সিইও অনিতা টাইসেন।

এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বি’ইয়ার চেয়ারপার্সন মানজুর হাসান, নির্বাহী পরিচালক আশফাহ হক, বোর্ড মেম্বারগণ, উদ্যোক্তা, মেন্টর বিভিন্ন পেশাজীবি ও সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বি’ইয়ার ফাউন্ডার চেয়ারপার্সন ও বোর্ড মেম্বার জনাব আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, বলেন, তরুণদেরকে উদ্যোক্তায় পরিণত করে দেশের বেকারত্ব মোচন এবং কর্মসংস্থান তৈরিই বি’ইয়ার মূল উদ্দেশ্য। সে উদ্দেশ্য আমরা সঠিকভাবে বাস্তবায় করতে পারছি, ফলে আজ আমরা অনলাইনে উদ্যোক্তাদের জন্য কনটেন্ট নিয়ে আসতে পারছি। এ জন্য আমাদের উদ্যোক্তা, মেন্টর, উন্নয়ন সহযোগিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বি’ইয়া নির্ভবাহী পরিচালক আশফাহ হক বি’ইয়ার সূচনা থেকে এ পর্যন্ত অর্জিত সফলতা সংক্ষেপে উপস্থাপন করে বলেন, বি’ইয়াণইও এর নেটওয়ার্ক সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের ১৮-৩৫ বছরের তরুণ নারী-পুরুষকে উদ্যোক্তা বিষযক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং, ব্যভসা পরামর্শ, বিপণেন সহযোগিতা করে আসছে।

বর্তমানে YBI I IKEA Foundationএর সহযোগিতায় আমরা উদ্যোক্তাদেও অনলাইন দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। এরই ফলে আজ আমরা বি’ইয়া অনলাইন লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এলএমএস-উদ্যোক্তার পাঠশালা ডিজিটাল’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এই সাইটের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তারা সহজেই লগইন করে উদ্যোক্তা উন্নয়ন সম্পর্কিত তথ্য, ভিডিও স্বল্পমূল্যে পেতে পারবে।

এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জেলা,উপজেলাও ইউনিয়ন পর্যয়ায়ের উদ্যোক্তারা উপকৃত হবে এবং নিজেদের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে অনলাইন উদ্যোগে আরো সক্রিয় ভুমিকা রাখতে পারবে। এই এলএমএস-এর মাধ্যমে দেশের সকল তরুণ উদ্যোক্তা তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং তথ্য সংগ্রহ করতে সহযোগীতা করতে বি’ইয়া বদ্ধ পরিকর।

বি’ইয়ার সূচনা থেকে এ পর্যন্ত সেবা পাওয়া প্রায় ২০০০ উদ্যোক্তা ও মেন্টরদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা আমেনা বেগম, ওয়াহাব খান, শারমিন মৌসুমী, সাইফুল ইসলাম, ফাতিহা ইসলাম ও মেন্টর আকতার উজ জামান তাদেও অনুভুতি এবং বি’ইযার বিভিন্ন সেবা পাওয়ার সুফল সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন ও বি’ইয়ার মধ্যে রয়েছে নিবিড় কার্যসম্পর্ক। আমরা দুই প্রতিষ্ঠানই দেশের উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। তবে বি’ইয়া উদ্যোক্তাদের জন্য অনলাইনে যেভাবে কাজ করছে তা সথ্যিই প্রশংসনীয়। আমরাও চাই উদ্যোক্তারা অনলাইনে তাদের উদ্যোগ পরিচালিত করুক।

এ জন্য বি’ইয়া YBI I IKEA Foundation এর সহযোগিতায় এগিয়েছে। বিশেষ করে কোভিড মহামারীতেও তারা অনলাইন সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে যা উদ্যোক্তা উন্নয়নে একটি উদাহরণের সৃষ্টি করেছে। এসএমই ফাউন্ডেশন ও বি’ইয়া একসঙ্গে কিভাবে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষে গ্রহণ করবো। আমি বি’ইয়া এলএমএস উদ্যোক্তার পাঠশালা’র সফলতা কামনা করছি।


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে Youth Business International (YBI) এর প্রধান নির্বাহী আনিতা টাইসেন বলেন, ওয়াইবিএ সারা বিশ্বের ৭৫ টি উদ্যোক্তা উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কেও সদস্য হিসেবে বি’ইয়া ২০০৯ সাল থেকে অত্যন্ত সফলতার সাথে কার্যয়ক্রম পরিচালিত করছে। মেন্টরিং এর মাধ্যমে উদ্যোক্তা উন্নয়নে বি’ইয়া বাংলাদেশে খুব ভালো কাজ করছে।

বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা সৃষ্টিশীল কাজে উৎসাহি। আনিতা টাইসেন, মেন্টরিং কার্যক্রম বাংলাদেশে উদ্যোক্তা উন্নয়নে অবদান রাখছে। আরো বলেন, এখন সময় এসেছে নতুন নতুন উদ্যোগের কথা চিন্তা করা।

এক্ষেত্রে, বি’ইয়ার অনলাইন এলএমএস উদ্যোক্তার পাঠশালা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমি এই উদ্বেধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক ও বিশেষ ড.মো: মফিজুর রহমানের উপস্থিতি এটাই প্রমান করে যে, বি’ইয়ার উদ্যোক্তা উন্নয়ন কার্যক্রমে সকলের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ কতটা কার্যকর ও সার্থক। YBI I IKEA Foundation এর পক্ষ থেকে আমি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে বি’ইয়া এলএমএস উদ্যোক্তার পাঠশালা’র সম্পর্কে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি,বলেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার যেমন দেশ থেকে বেকারত্ব দূর করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সেইসাথে নারীরাদেরকে মূলধারার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে অবদান রাখছে, বি’ইয়াও একদিন তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। দেশের ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্বাবধানে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

এক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা বসে নেই। আমাদেও সরকার উদ্যোক্তাদেও জন্য অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে অনেক স্টার্টআপ উদ্যোক্তা অনেক ভালো ব্যবসা করছে। স্টার্টআপ, গ্রোথ, কুটির সব ধরনের উদ্যোক্তা উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উধ্যোগ গ্রহণ করেছে।

জুনাইদ আহমেদ পলক আরো বলেন, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, বি’ইয়া’র যে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য তা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে অনেক অবদান রাখবে। আমিও মনে করি ১৮ থেকে ৩৫ বছরের তরুণ বিশেষ করে নারীর অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে বির্তমান সরকার। প্রান্তিক, পিছিয়ে পরা তরুণদেরকে ব্যবসামুখি করা, নতুন নতুন উদ্যোগ বাছাই ও গ্রহণে সহযোগিতা করা, ব্যবসা সম্পর্কিত সহজ ও সাবলীল প্রশিক্ষণ প্রদান,ব্যবসা পরামর্শক হিসেবে মেন্টর নিয়োজিত করা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে তরুণ উদ্যোক্তাদের সংযোগ সাধন করা, বিপণনে সহযোগিতা প্রদানে যে কাজ করছে করছে বি’ইয়া, তা সত্যিই প্রশসংশার দাবিদার।

কোভিড মহামারীতে আমরা দেশের ব্যবসা পরিস্থিতি সাবলিল রাখার চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছি। এ জন্য উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কর্মচারি সকলকে সচেতন থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদ্যোগ পরিচালিত করতে হবে। সেই সাথে অনলাইন ব্যবহার করে আমাদের সৃজনশীল উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নিতে হবে। তরুণ যারা ১৮ থেকে ৩৫ বছরের তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আপনাদের জন্য অনলাইনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি এবং তা বাস্তবায়নও করছি। আমরা বি’ইয়াকে এ বিষয়ে যথাসাধ্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। উদ্যোক্তাদের জন্য অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ কার্যক্রম গ্রহণ করার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদেও দক্ষতাবৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বি’ইয়া গত এক বছর থেকে তাদের কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালিত করে সফল হয়েছে।

অন্যদেরকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। আমি বি’ইয়ার এই অনলাইন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। পরিশেষে YBI I IKEA Foundation, এসএমই ফাউন্ডেশন, উদ্যোক্তা, মেন্টর এবং বি’ইয়ার সকল কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বি’ইয়া খগঝ-উদ্যোক্তার পাঠশালা’র শুভ উদ্বোধন ঘোষণা কওে প্রধান অতিথি তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।

বি’ইয়া এলএমএস-উদ্যোক্তার পাঠশালা’র অনলাইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বি’ইয়ার ট্রেজারার ও বোর্ড মেম্বার জনাব শাহারিয়ার সাদাত বলেন, আজ বি’ইয়া তথা উধ্যোক্তাদের জন্য একটি গর্বের দিন। আমরা কোভিড মহামারী মোকাবেলা করে অনলাইনে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করার লক্ষ্যে বি’ইয়া খগঝ-উদ্যোক্তার পাঠশালা’র শূভ উদ্বোধন করলাম।

আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সরকার, এসএমই ফাউন্ডেশন,, YBI I IKEA Foundation এর সহযোগিতা বি’ইয়া’র জন্য বিস্তৃত হবে।

আমরা উদ্যোক্তা উন্নয়নে এগিয়ে যাবো। আমি বাংলাদেশের সকল উদ্যোক্তাকে অনুরোধ জানিচ্ছি আজ থেকেই এই খগঝ-উদ্যোক্তার পাঠশালা’র লগইন করে নিবন্ধিত হবে। পরিশেষে, সকল উদ্যোক্তা, মেন্টর, সস্মমানিত প্রধান অতিথি জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি, বিশেষ অতিথি আনতিা টাইসেন ও ড.মো: মফিজুর রহমানসহ সকল বোর্ড মেম্বার ও সাংবাদিক বৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।


উল্লেখ্য, উক্ত বি’ইয়া এলএমএস-উদ্যোক্তার পাঠশালা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বি’ইয়া’র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মেহেদী হাসান কিংশুক ও প্রোগ্রাম অফিসার সাজিয়া সুলতানা ও চাঁদনি মেবিন। উক্ত অনলাইন উদ্বোধনে ১৪৭ জন উদ্যোক্তা মেন্টর, শুভাকাঙ্কি যুক্ত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন অনলাইন নিউড পোর্টালে সরাসরি প্রচারিত হয়।

বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর