বাঁশিতে ফুঁ দিতেই শরীরে বসছে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি

বাঁশির সুরে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে জড়ো হয় মাহাতাব মোড়লের শরীরে। তিনি যেন হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা। ৭০০ বছর পর জার্মানির হ্যামিলিয়ন শহর থেকে যশোরের কেশবপুরে ভিন্ন সাজে এসেছেন সেই বংশীবাদক! সকলেই তাকে চেনেন মৌমাছি মাহাতাব নামে। মৌমাছির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ অভ্যাস গড়ে তুলেছেন তিনি।

মাহাতাব মোড়ল জানান, ১২ বছর বয়স থেকে ২০ বছর ধরে তিনি মধু সংগ্রহ করছেন। তার বাড়ি ছিল সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায়। বাবার বৈবাহিক সূত্রে কেশবপুরের মোমিনপুর গ্রামে নানার বাড়িতে তাদের বসবাস। এখানেই তারা স্থায়ী বাসিন্দা। সুন্দরবনসহ সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর অঞ্চলে তিনি মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকেন। মধুর চাক ভাঙতে ভাঙতে মৌমাছির প্রতি তার ভালোবাসা তৈরি হয়। প্রথমে বালতি, টিনের থালার মাধ্যমে একটি দুটি মৌমাছি শরীরে নিতে নিতে এখন বাঁশির সুরে হাজারও মৌমাছি আনতে পারেন তিনি। মধুর উচ্ছিষ্ট (মধুর উপরের স্বর বা গ্যাজা) কাপড়ে লাগিয়ে রাখেন। ওই কাপড়ে মৌমাছি বসে খাদ্য গ্রহণ করে তার বাড়ি এলাকায় উড়ে বেড়ায়। বাঁশির কৌশলগত সুরে মৌমাছি বসতে বসতে তার শরীরে চাকের আকার ধারণ করে।

মৌমাছিও নাকি তার শরীরে কামড় দেয় না।

চলতি মৌসুম থেকেই বাঁশির সুর রপ্ত করেছেন। তিনি তার বাড়িতে বাঁশির সুর শুরু করলে পাঁচ মিনিটেই হাজারও মৌমাছি শরীরে জড়ো হয়। বাঁশি বাজানো বন্ধ করার পর মৌমাছি উড়ে পাশ্র্ববর্তী বাগানে চলে যায়। এ দৃশ্য দেখার জন্য শত শত উৎসুক মানুষ বাড়িতে ভিড় করেন।

মাহাতাব মোড়ল আরও বলেন, এটি শুধুমাত্র মৌমাছির প্রতি ভালোবাসা থেকেই করা সম্ভব হয়েছে। মধু আহরণ করেই তার সংসার চলে। সংসারে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

বিভিন্ন স্থান থেকে তার বাড়িতে মানুষ ওই দৃশ্য দেখতে আসে। এমন ঘটনা যেন কেউ স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাসী হবার কথা নয়। বিশ্বাস না হলেও বাস্তবে তা আশ্চর্যজনক।

এ্যান্টনি দাস(অপু)/বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর