এমপি-মন্ত্রীদেরও ঠকিয়েছেন ‘প্রতারক’ আহসান শামীম

রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের দোষ-ত্রুটির খোঁজে প্রতিদিনই দেশের প্রায় সবকটি দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশন চ্যানেলের খবর দেখেন তিনি। পরে পর্যালোচনা করে তৈরি করেন অনিয়মে জড়িত ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধদের তালিকা।

তারপর দেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমের প্রধান প্রতিবেদক পরিচয়ে ফোন করে তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশের হুমকি দিয়ে হাতিয়ে নেন টাকা। তাছাড়াও সাংবাদিক পরিচয়ে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেন। এভাবে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া আহসান শামীমকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আহসান শামীম- খবরের সঙ্গেই কাটে তার দিন-রাত। দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর পর্যালোচনা করেন প্রতিদিন। বাছাই করেন জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকদের নিয়ে প্রচারিত নেতিবাচক সংবাদ। আর এই খবরকে পুঁজি করেই গড়ে তুলেছেন আয়-উপার্জনের উপায়।

প্রথম ধাপে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হওয়া ব্যক্তিদের ফোন নম্বর যোগাড় করেন এই একাকী প্রতারক। তারপর কখনও দেশের মূলধারার জাতীয় দৈনিক কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদক পরিচয়ে টার্গেট ব্যক্তিকে ফোন করে আরও নেতিবাচক খবর প্রকাশের হুমকি দিয়ে হাতিয়ে নেন টাকা।

সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত না হয়েও দীর্ঘদিন ধরে এভাবে শত শত ব্যক্তিকে ঠকানো এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ (তেজগাঁও) উপ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন,’সে প্রতিদিনের খবর রাখে; কোন জনপ্রতিনিধি বা কোন এমপি, মেম্বার কী বিপদে আছে। সে তাদেরকে জানায়, আপনার বিরুদ্ধে সংবাদ রেডি হয়ে আছে, আমরা জাস্ট সংবাদটা প্রচার করবো। এরপর দরকষাকষি করে যা পাচ্ছে তাই নিচ্ছে। এভাবেই সে তার প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।’

সাংবাদিক ছাড়াও এমপি-মন্ত্রীদের ব্যক্তিগত সহকারী ও সরকারি কর্মকর্তা সেজে অর্থ আত্মসাতে জড়িত আহসান শামীম। আবার বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সেজে নিয়োগের কথা বলে এমপি-মন্ত্রীদের ফোন করে লোক পাঠাতে বলতেন। তারপর চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণার অর্থে আঙুল ফুলে কলাগাছ দশা আহসান শামীমের।

ওয়াহিদুল ইসলাম আরও জানান,’গ্রামে তার প্রচুর জায়গা-জমি আছে। পলিটিক্যাল লোকজনের সঙ্গে ঘোরাফিরা করে। ব্যাপক একটা অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছে।’

প্রতারণার ফাঁদ এড়াতে যাচাই-বাছাই না করে আর্থিক লেনদেন না করার আহ্বান পুলিশের।

বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর