ব্যাটিং বিপর্যয়ে ইংল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার: শুরুতে অ্যারোন ফিঞ্চ আর ডেভিড ওয়ার্নার মিলে যে ঝড় তুলেছিলেন এবং যেভাবে রানের চাকা দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলছিল, অস্ট্রেলিয়ার তাতে সবাই ধরে নিয়েছিল অন্তত ৩৪০ কিংবা ৩৫০ প্লাস রান হয়ে যাবে আজ।

কিন্তু শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়াকে বেশ ভালোভাবেই চেপে ধরতে পেরেছিল ইংলিশ বোলাররা। তাতেই অস্ট্রেলিয়া থেমে গেলো ৩০০ রানের আগে, মাত্র ২৮৫ রানে। জয়ের জন্য তাই ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়াল ২৮৬ রান।

ইংল্যান্ডের ব্যাটিং উইকেটগুলোতে যে হারে রান উঠছে, তাতে ২৮৬ রান খুব বেশি নয়। তারওপর, ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা রয়েছে দুর্দান্ত ফর্মে। এদের মধ্যে দু’জনও ঠিকমত দাঁড়িয়ে যেতে পারলে ২৮৬ রান করা খুব বেশি কিছু হবে না।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার। চলতি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের পর এই ম্যাচকেই ভাবা হচ্ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়, হাই ভোল্টেজ। এমন ম্যাচের শুরুতেই ইংল্যান্ডের ওপর এক তরফা প্রভাব বিস্তার করে বসেছিল অস্ট্রেলিয়া।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই অসিরা তুলেছে ১০০ প্লাস রান। ১২৩ রানের মাথায় ওয়ার্নার আউট হন হাফ সেঞ্চুরি করে। মাঝে উসমান খাজা মাত্র ২৩ রান করে আউট হয়ে গেলেও অপর ওপেনার অ্যারোন ফিঞ্চ সেঞ্চুরি করেই সাজঘরে ফেরেন।

১১৫ বলে সেঞ্চুরি করেন অসি অধিনায়ক। ১১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি। সেঞ্চুরি করার পরের বলেই জোফরা আর্চারের বলে ক্রিস ওকসের হাতে ক্যাচ দেন ফিঞ্চ।

তবে ফিঞ্চ আউট হলেও অস্ট্রেলিয়ার রান বাড়ছিল হু-হু করে। মাত্র ৩৭ ওভারেই ২০০ রান পূর্ণ করে ফেলে তারা। ফিঞ্চ আউট হওয়ার পর মাঠে নেমে ঝড় তোলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাত্র ৮ বলে ১২ রান করে মার্ক উডের বলে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

শুরুতে ইংলিশ বোলারদের কোনো পাত্তাই দিচ্ছিল না দুই অসি ওপেনার। ক্রিস ওকস, জোফরা আর্চার, মার্ক উড, বেন স্টোকস- এই চার পেসারের সঙ্গে আদিল রশিদ এবং মঈন আলি- এই দুই স্পিনারেও কোনো কাজ হচ্ছে না। উইকেটের দেখা মিলছিল না।

শেষ পর্যন্ত সফল হন মঈন আলি। ২৩তম ওভারের চতুর্থ বলে গিয়ে পেলেন উইকেটের দেখা। মঈন আলিকে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন ডেভিড ওয়ার্নার। জো রুট সেই ক্যাচটি আর মিস করলেন না। ৬১ বলে ৫৩ রান করে ফিরে গেলেন ওয়ার্নার। ৬টি বাউন্ডারিতে নিজের ইনিংস সাজান তিনি।

২৩ রান করা উসমান খাজাকে বোল্ড করেন বেন স্টোকস। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মার্ক উপের বলটি চেয়েছিলেন উইকেরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে তুলে দেবেন। কিন্তু পারলেন না। বরং, ব্যাট চুমু দিয়ে বল গিয়ে পড়ে উইকেটরক্ষক বাটলারের গ্লাভসে। ১২ রান করে আউট হন তিনি।

স্টিভেন স্মিথ ক্রিস ওকসের বলে ক্যাচ দেন আর্চারের হাতে। তার আগে তিনি করেন ৩৪ বলে ৩৮ রান। শেষ দিকে অ্যালেক্স ক্যারে কিছুটা মারমুখি হন। ২৭ বল থেকে তিনি করেন ৩৮ রান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। ক্রিস ওকস ২টি, আরচার, মার্ক উড, বেন স্টোকস, মঈন আলি এবং আদিল রশিদ নেন ১টি করে উইকেট।

অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ২৮৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে সাজঘরে ফিরেন জেমস ভিনস।ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে জেসন ব্রেনড্রোফের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।

তারপর মাঠে আসেন দারুন ফর্মে থাকা জো-রুট। কিন্তু বেশিক্ষন মাঠে থাকতে পারেননি এই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান । দলীয় ১৫ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৮ রান নিয়ে স্ট্রাকের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই ইংলিশ তারকা।

তারপর দলের ত্রাতা হয়ে আসেন ইংলিশ দলপতি ইয়ান মরগান। কিন্তু রুটের মতো তিনি ও বেশিসময় মাঠে থাকতে পারেননি। দলীয় ২৬ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৪ রান নিয়ে স্ট্রাকের বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন ইংলিশ দলনেতা। যার ফলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে যায় ইংল্যান্ড ।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১১ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৪৩ রান।বেন স্টোকস ৪ রান এবং জনি ব্যারিস্টও ২৫ রান নিয়ে ব্যাটিং করছেন ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর