করোনায় বিপর্যস্থ খুলনা: হাসপাতালের মেঝেতে চলছে চিকিৎসা

বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় খুলনা বিভাগে সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চাপের ফলে এখন রোগীদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে খুলনায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের মুখপাত্র ডা.সুহাস চন্দ্র হালদার বলছেন, চিকিৎসার সব সরঞ্জাম থাকলেও রোগীর চাপ বেশি থাকায় তাদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে, প্রতিনিয়ত তাদের সতর্ক থাকতে হচ্ছে।

“পর্যাপ্ত সিট দিতে পারছি না। ৩০জনকে ফ্লোরে রেখেছি। এটা একটা বিশেষায়িত চিকিৎসা, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানেলা, ভেন্টিলেশন দরকার হতে পারে। কিন্তু রোগীর এত চাপ, যে কারণে আমরা ফিরিয়ে দিতে পারছি না,” বলেছন ডা. হালদার।

খুলনা জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ হাসপাতালে এখন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আসনের চেয়ে বেশি।

বিশেষ এই হাসপাতালে আসন সংখ্যা ১৩০টি, কিন্তু রোগী এখন সেখানে ১৬০জন বলে জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিভাগে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু।

কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় খুলনায় ৭৬৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

এদিকে করোনাভাইরাসের রোগীর চাপ সামলাতে খুলনা সদর হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের সব সেবা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজে।

আর সদর হাসপাতালকে শুধু মাত্র কোভিড রোগিদের জন্য আজ রবিবার থেকে সেবা চালু করা হয়েছে।

নতুন হটস্পট

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহম্মদ বলছেন খুলনা বিভাগ হঠাৎ করেই করোনাভাইরাসের হটস্পট হয়ে ওঠার পিছনে তিনটা কারণ রয়েছে।

তিনি বলেন “ঈদের সময় লোকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যাতায়াত করেছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিষয়টা অস্বীকার করার কিছু নেই, এছাড়া লোকজনের মধ্যে সচেতনতা একেবারেই নেই”।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর চাঁপাইনবাবাগঞ্জ এবং রাজশাহীতে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। এখন খুলনা এবং তার আশেপাশের জেলা অর্থাৎ পুরো খুলনা বিভাগ করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে হিমশিম খাচ্ছে।

খুলনার একজন বাসিন্দা শামীমা সুলতানা শিলু বলছিলেন খুলনার আশপাশের সব জেলা ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ঘেঁষা।

তাই ভারতের সঙ্গে যাতায়াতের ক্ষেত্রে খুলনার উপর দিয়ে যেতে হয়।

তিনি মনে করছেন সেটা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির পিছনে একটা বড় কারণ ।

মিজ শিলু বলেন “খুলনাকে টাচ করতেই হবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যেতে হলে। সেক্ষেত্রে ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা এফেক্টেড হবে সেটা জানা ছিল কিন্তু যেটা ছিল না সেটা হল মানুষের সচেতনতা।”

বিভাগের ১০টা জেলায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এ পর্যন্ত ৯৮৭।

স্থানীয় প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে লকডাউনের কারণে মঙ্গলবার থেকে সাতদিন অন্যান্য জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে খুলনা জেলা।-বিবিসি বাংলা।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর