সামরিক আইন উঠে যাওয়ার গুজব ছড়ায়

এই দিনে যশোরে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে বিরাট সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে যোগ দিতে আসা স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে ছিল লাঠি, তীর, ধনুক। সমাবেশ শেষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়। সারাদেশে মাইকযোগে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হয়েছিল।
দেশের অবস্থা ছিল টালমাটাল। সিলেটে হাজার হাজার মহিলা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজ নিজ পেশার ব্যনারে মিটিং, মিছিল করেছিল। অন্যদিকে মিরপুর, চট্টগ্রাম, পার্বতীপুর-সৈয়দপুরে বাঙালি ও বিহারীদের মধ্যে মারামারি, খুনোখুনি, রক্তারক্তি হচ্ছিল। সেনাবাহিনী বিহারিদের উস্কানি দিয়ে সংঘর্ষকে আরো বেগবান করেছিল।

বাইশ তারিখে আর একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, সামরিক আইন উঠে যাচ্ছে। কিছু কিছু গুজব এমনভাবে ছড়ানো হচ্ছিল যাতে- মানুষের লক্ষ্য বিভ্রান্ত হয়। সামরিক আইন উঠে যাওয়া ঠিক সেই রকম একটি গুজব।

এই গুজবটি ছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভুট্টো সরাসরি বলেছিলেন- পাকিস্তানে এখন তিনটি শক্তি: ১.আওয়ামী লীগ, ২. পাকিস্তান পিপল্স পার্টি, ৩. সামরিক বাহিনী। অতএব তিনটির মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীই যদি ব্যারাকে ফিরে যায়, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অবশ্যম্ভাবী।

এই বাইশ তারিখেই বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে এতো পরিমাণ মিছিল গিয়েছিল যা আগে কখনো যায়নি। বঙ্গবন্ধু সবাইকে তৈরি থাকার কথা বলেছিলেন।

সূত্র: একাত্তরের দিনগুলি; জাহানারা ইমাম। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস: ড. মোহাম্মদ হান্নান। অসহযোগ আন্দোলন: রশীদ হায়দার

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর