শেরপুরে তোপের মুখে দলিল লেখক সমিতির কমিটি বিলুপ্ত, ২ পক্ষের হাতাহাতি
বগুড়ার শেরপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির কমিটি গঠনের পর থেকে তাদের নানা অনিয়ম দুর্নীতি, দলিল প্রতি অতিরিক্ত অর্থ আদায়, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যাবহার ও কতিপয় নেতাদের অসৌজন্যমুলক আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সাধারণ দলিল লেখকরা।
মেয়াদোত্তীর্ণ না হলেও কমিটির কার্যকাল মানতে নারাজ অধিকাংশ দলিল লেখক। দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা চালাচালির এক পর্যায়ে সাধারণ দলিল লেখকদের তোপের মুখে ১৩ জুন রোববার দুপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এসএম ফেরদৌস কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন। এ ঘটনা নিয়ে দলিল লেখকদের কমিটি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গত ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সদস্যদের ভোট ছাড়াই থানা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। ২ বছর মেয়াদী কমিটি গঠন করা হলেও সিলেকশন কমিটির নের্তৃবৃন্দরা রেজুলেশনের মাধ্যমে আরও ১ বছরের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩ বছর করে। এতে ক্ষুব্ধ হতে থাকে সাধারণ দলিল লেখকরা। প্রশাসনের মৌখিক সম্মতিতে উল্লেখিত কমিটির ২ বছর মেয়াদ ২০২১ সালের জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা। তাছাড়া অতিরিক্ত ১ বছর বাড়ানোয় মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের ৭ জুলাই।
এদিকে অতিরিক্ত এক বছর মেয়াদ মানতে নারাজ হয়ে সাধারণ দলিল লেখকরা ওই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করার জন্য বর্তমান কমিটিকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ১৩ জুন রবিবার দুপুর ১২ টায় ওই দলিল লেখক সমিতির কার্যালয়ে সাধারণ সদস্যরা একাত্বতা প্রকাশ করে কমিটি বিলুপ্তের পক্ষে অবস্থান নেয়। বর্তমান কমিটির সহ সাংগঠনকি সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক রেজুলেশন অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ ৩ বছর পুর্ন না হওয়া পর্যন্ত এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা যাবেনা বলে মন্তব্য করেন। এতে কমিটির কতিপয় নেতারা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এতে কতিপয় দলিল লেখক ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নেতাকে লাঞ্ছিত করে। এদিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে তড়িঘড়ি করে কোন মিটিং ছাড়াই বর্তমান কমিটির সভাপতি এস এম ফেরদৌস কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
পরে উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে প্রবীন দলিল লেখক দীলিপ কুমার দাসকে আহবায়ক ও মো. আতাউর রহমান কে যুগ্ম আহবায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়খ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পূর্বতন কমিটির সভাপতি এস এম ফেরদৌস বলেন, সাধারণ দলিল লেখকরাই কমিটি করে দিয়েছিল, এখন তারা মানতে নারাজ, তাই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান বলেন, কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর সাধারণ সদস্যদের সমন্বয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন হয়েছে। তবে এ কমি্িট আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ঘোষণার মাধ্যমেই পরবর্তী কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। তাছাড়া দলিল লেখক সদস্যদের জন্য দলিল লেখার কাজে অর্থ আদায়ের বিষয় পূর্বতন কমিটির নিয়ম অনুসারেই চলবে।
রাশেদুল হক/বার্তাবাজার/পি