দাঁতভাঙ্গা কলেজে নিয়োগ জালিয়াতিতে অভিযুক্তকে পদোন্নতির সুপারিশ!

নিয়োগ জালিয়াতির অভিযোগ থাকা সত্বেও জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক (সহকারি অধ্যাপক) পদে পদোন্নতির সুপারিশ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার আলমগীর হোসেন নামের এক প্রভাষক বাদি হয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জুন ৪ জন প্রভাষককে জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতির জন্য একটি রেজুলেশন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)এর নিকট পাঠায় কলেজ কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুপারিশপ্রাপ্ত ৪ জন প্রভাষকের মধ্যে নজরুল ইসলাম (জীব বিজ্ঞান) যার ইনডেক্স নং- ৬১৬৫৫৪। যার নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রাদিতে নানা অংসঙ্গতি থাকায় চাকুরীতে জ্যৈষ্ঠ হওয়া সত্বেও ২০১৮/১৯ইং সালে তার চেয়ে কনিষ্ঠ দুই প্রভাষক আব্দুস সবুর (ইনডেক্স নং-৬১৬৭৬১) ও চাঁন মিয়া (ইনডেক্স-৬১৬৭৪২) কে সুপারিশ করেন অধ্যক্ষ। তবে এ বছর একই সমস্যা থাকলেও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নজরুল ইসলামকে জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হয়।

সুপারিশপ্রাপ্ত প্রভাষক নজরুল ইসলাম এর আগে ১৯৯৯ সালে জালিয়াতি করে চর শৌলমারী ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক (জীব বিজ্ঞান) পদে নিয়োগ নেন। ওই সময় নিয়োগ নীতিমালায় প্রভাষক পদে এমএসসি ডিগ্রী বাধ্যতামূলক হলেও শুধুমাত্র বি.এস.সি (সম্মান) সনদ দেখিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ নেন ও এমপিও ভুক্ত হন। পরবর্তীতে ২০০০ সালে এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। পরে ২০০১ সালে ওই কলেজের ইনডেক্স নম্বর নিয়ে দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজে নিয়োগ নেন।

দাঁতভাঙ্গা হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন (ইংরেজি) বলেন, প্রভাষক নজরুল ইসলামের ব্যাপারে অধ্যক্ষকে একাধিকবার অভিযোগ করলেও তিনি তা আমলে নেননি। বিধি মোতাবেক জ্যৈষ্ঠ হওয়া স্বত্বেও ব্যক্তিগত আক্রশের জেরে অধ্যক্ষ তাকে পদোন্নতির সুপারিশ থেকে বঞ্চিত করেন এবং মাউশিতে মিথ্যা তথ্য পাঠিয়ে এবারের পদোন্নতি আটকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগি ওই শিক্ষক।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক জানান, এর আগে পদোন্নতির জন্য নজরুল ইসলামের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিলেও নিয়োগ জালিয়াতি ও কাগজপত্রাদিতে সমস্যার কারণ দেখিয়ে জ্যৈষ্ঠ হওয়া সত্বেও নজরুল ইসলামকে পদোন্নতির সুপারিশ থেকে বাদ দেন অধ্যক্ষ বদিউজ্জামান।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে প্রভাষক নজরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বদিউজ্জামান বলেন, এর আগে প্রভাষক নজরুল ইসলামের জৈষ্ঠ্যতা না থাকায় তার চেয়ে জ্যৈষ্ঠ দুই শিক্ষককে সুপারিশ করা হয়েছিল। এর আগের প্রতিষ্ঠানে (চর শৌলমারী ডিগ্রি কলেজ) প্রভাষক নজরুল ইসলামের অবৈধভাবে নিয়োগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আরও বলেন, নিয়োগে কোনো ত্রুটি থাকলে তো ওই প্রতিষ্ঠানেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো। সুপারিশ বঞ্চিত প্রভাষক আলমগীর হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইয়াছির আরাফাত নাহিদ/বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর