জোড় করে বিষ খাওয়ানোর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী নারীকে হত্যা চেষ্টা

রোকনুজ্জামান কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর যদুবয়রা ইউনিয়নের বড়ইচাড়া আমতলা এলাকায় আলেয়া খাতুন (৩৫) নামে এক নারীকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আলেয়া খাতুনের স্বামী গোকুল মন্ডল বলেন, আমার স্ত্রী আলেয়া কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী মাঝে মধ্যে বিভিন্ন বাজারে আমাকে না জানিয়ে ভিক্ষা করত, সেদিনও সে ভিক্ষার জন্য বেড় হয়েছিলো। আমি যদুবয়রা ইউনিয়নের লালন বাজারে দর্জির কাজ করি শুক্রবার (২১ জুন) সারাদিন দোকানে কাজ করে বাড়ি ফিরে আমার মেয়ের কাছে জানতে পাড়ি আলেয়া পান্টি বাজারে গেছে। অন্যদিন বাড়ি ফিরে এলেও সেদিন আর সে বাড়ি ফেরে আসেনি আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে রাত ১টার দিকে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়ি। পর দিন শনিবার (২২ জুন) সকাল সাড়ে ৭ টার সময় লালন আবাসন প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক আকুল মন্ডল আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জানায় আলেয়াকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় বড়ইচারা আমতলা এলাকায় পাওয়া গেছে আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে আলেয়াকে হাত, পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই। সেই সময় যদুবয়রা ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলো। পরে পুলিশ আলেয়াকে উদ্ধার করে আলেয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলে। পুলিশ আমাকে আরও বলে আলেয়া এখন কথা বলতে পাড়ছে না সে একটু সুস্থ হলে আমরা তার কাছে বিস্তারিত শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। পরবর্তী সময়ে আমি তাকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। বর্তমানে সে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আলেয়ার স্বামী গোকুল মন্ডল আরও বলেন, লালন বাজার এলাকার ময়না মোল্লার ছেলে ইমরান ও সেলিম ব্যাপারী এবং রাজ্জাক মিলে লালন আবাসন প্রকল্পের পরিত্যাক্ত ঘরের দরজা জানালা টিন চুরি করে প্রায়ই বিক্রি করত সেই বিষয়টি আমার স্ত্রী স্থানীয়দের কাছে বলে দেয় এ নিয়ে ওই তিন জনের সাথে আমার স্ত্রীর গণ্ডগোল বাঁধে কয়েকবার তারা আমাদের আবাসন থেকে বেড় করে দেওয়ারও চেষ্টা করে। আমার স্ত্রী কাছে তাকে কারা বেঁধে রাখে জানতে চাইলে সে ইমরান ও সেলিম ব্যাপারীকে চিনতে পেড়েছে বলে আমাকে জানায়।

কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আলেয়া খাতুন হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে সে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলতে পারেননি।

এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার প্রেমাংশু বিশ্বাস বলেন, তাকে জোড় করে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছে, সেই কারণে সে কথা বলতে পাড়ছেন না। আগে তাকে ইনঞ্জেকশনের মাধ্যাম্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো এখন তাকে মুখে ওষুধ খাওনা হচ্ছে সে এখন আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করছে তার পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও তিন চারদিন সময় লাগবে।

এ ব্যাপারে যদুবয়রা ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, স্থানীয় মোমিন মেম্বার ফোন করে আমাদের জানান বড়ইচড়া আলতলা এলাকায় হাত মুখ বাঁধা অবস্থায় এক মহিলা পড়ে আছে এ খবর পাওয়ার পর এ এস আই কাউসার ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মহিলাকে হাত, পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে সে সময় সে কোনো কথা বলতে পাড়ছিলোনা পরে আমরা ওই মহিলার স্বামীকে খবর দিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠায়। সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে একটু সুস্থ হলে আমরা তার জবানবন্দি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ ব্যাপারে জানতে কুমারখালী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম মিজানুর রহমানের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর