এই বাজেট দুর্বল, বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং হবে: সিপিডি

সদ্য প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটকে দুর্বল উল্লেখ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, এটি বাস্তবায়নে সামনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) বিকালে সিপিডির ফেসবুক পেজে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে বাজেট ভালো করতে কিছু চেষ্টা করা হয়েছে। কভিডকালীন বাজেট হিসেবে যদি এটিকে দেখি, একদিকে কভিডকে মোকাবেলা করা এবং অন্যদিকে কভিড থেকে ফিরে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করার যে বাজেটটি প্রয়োজন ছিল এটায় সেটি আমরা লক্ষ্য করিনি। আগামী কয়েক বছরে স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্য খাতগুলো কেমন হবে সে বিষয়ে একটা পরিষ্কার দিকনির্দেশনা থাকা উচিত ছিল।

এছাড়া আমাদের অন্য পরিকল্পনা- যেমন: অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যে লক্ষ্যমাত্রাগুলো আছে সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাজেটটি করা উচিত ছিল। সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে এবারের বাজটটি দুর্বল অনুমিত এবং বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতার মধ্যেই কভিডকালীন একটি বাজেট। এটি আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাজেটটি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বাজেট এবং মহামারিকালের দ্বিতীয় বাজেট। এটি এমন একটি সময়ে উপস্থাপিত হলো যখন আমরা করোনার প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারিনি। আমরা গতবার বলেছিলাম এবং এবার আরও জোর দিয়ে বলেছি টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা করা, সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সরকারি বিনিয়োগ ও ব্যয় বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং সর্বোপরি কভিড থেকে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের জন্য একটি মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা দাঁড় করানো গুরুত্ব পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে বাজেটটি আমরা দেখলাম এটি কোন প্রেক্ষিতে প্রণীত হলো, সেটি একটি বিবেচনার বিষয়। কারণ আমরা যখন বাজেট বিশ্লেষণ করব তখন প্রেক্ষিতটিও বিবেচনা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গত অর্থবছরের বাজেটে কিছু ইতিবাচক দিক ছিল, আবার কিছু দুর্বলতাও ছিল। সেসময় রাজস্ব খাতে একটা ঘাটতি ছিল বড় রকমের, এটা কয়েক বছর থেকেই চলছিল এবং করোনার সময়ে আরও বেড়েছে।

সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে দুর্বলতা এবং সরকারি বিনিয়োগের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ধীরগতি, বার্ষিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের হার অত্যন্ত নিম্ন থাকাসহ অনেক দুর্বলতাই ছিল। এছাড়াও ক্ষুদ্র শিল্পে উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। ইতিবাচক দিকে রয়েছে রপ্তানি ও আমদানির গতিধারা কিছুটা ফিরে আসা, ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স প্রবাহ, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের (বিওপি) স্বস্তিদায়ক অবস্থা, মুদ্রার স্থিতিশীল বিনিময় হার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়া ইত্যাদি।’

টিকার জন্য বাজেটের ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের পরিমাণ অন্য বছরগুলোর মতোই আছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ ছিল, নতুন অর্থবছরেও এটি একই আছে। স্বাস্থ্যখাতে আমাদের বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, বরাদ্দ দিলেও সেটি বাস্তবায়ন হবে কি-না, কেননা গত অর্থবছরে আমরা দেখলাম বাস্তবায়নের হার স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে কম।

আমরা বলছি, এই খাতে স্বল্পকালীন পর্যাপ্ত অর্থ রাখার পাশাপাশি এই অর্থের যথাযথ ব্যবহারের লক্ষ্যে মধ্যমেয়াদে সংস্কার কাজগুলো চালিয়ে যেতে হবে। স্বাস্থ্য খাতটাকে পুরো ঢেলে সাজানোর কাজটা এখনই শুরু করতে হবে। গত এক বছরে আমরা সে ধরনের কোনো উদ্যোগ দেখতে পাইনি- এটা খুবই দুঃখজনক। শুক্রবার সকাল ১১টায় বাজেট নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হবে।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর