স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ মাদক ব্যবসায়ী স্বামীর বিরুদ্ধে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় স্ত্রীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কাজল ভূঁইয়া নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৮ মে) ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডলি (৪০) নামের ওই নারী মারা যান।

কাজল ভূঁইয়া আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আনোয়ারপুরের বাসিন্দা ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ভাতিজা। তার বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মামলা বিচারাধীন বলে আখাউড়া থানা সূত্রে জানা গেছে।

নিহত ডলির ভাই বিল্লাল হোসেন হৃদয় বলেন, আমাদের বাড়ি বরিশালে। কিন্তু উপজেলা সদরের মসজিদপাড়ায় বসবাস করি। সীমান্তবর্তী এলাকা আনোয়ারপুরের কাজল ভূঁইয়ার সঙ্গে আমার বোনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এরমধ্যে এক মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে মাঝে মাঝে মনোমালিন্য হতো।

তিনি আরও বলেন, ঈদের আগের দিন রাতেও সাংসারিক বিষয় নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতি কাজলের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরই জের ধরে ঈদের দিন সকালে স্বামী-স্ত্রী আবারও বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কাজল আমার বোনকে মারধর করে। তার ভাতিজা রামিমকে মোটরসাইকেল থেকে বোতল দিয়ে পেট্রোল আনতে বলে। রামিম বোতলে পেট্রোল এনে দিলে কাজল আমার বোনের শরীরে ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে আমার বোনের অবস্থা বেগতিক হলে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আমার বোন।

বিল্লাল হোসেন বলেন, এ খবর পেয়ে আমার স্ত্রী তাদের বাড়িতে গেলে তাকেও আটকে রাখা হয়। সে এখনও সেখানে আটক আছে।

আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান স্বপন বলেন, মারা যাওয়া নারীর ভাই আমাকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, আমরা একজন নারী অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রেখে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। সেখানে তার স্বজনরা রয়েছে। এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।

অভিযুক্ত কাজল ভূঁইয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, কাজল ভূঁইয়া একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। আখাউড়া থানার অন্তত ৭টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আমাদের হাতে তদন্তাধীন কোনো মামলা নেই। আমরা সব মামলা আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি। অন্যান্য থানায় তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকতে পারে।

রাসেল আহমেদ/বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর