এসিল্যান্ডের নাম করে ঘুষ আদায় করছেন দলিল লেখক!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নাম ভাঙিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক দলিল লেখকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রোমান আহমেদ নামের ওই দলিল লিখকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলার বগডহর গ্রামের অলি উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি।

এর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা রেজিস্ট্রার, সাব-রেজিস্ট্রার ও প্রেসক্লাবের সভাপতি-সেক্রেটারিকে।

লিখিত ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, উপজেলার বগডহর গ্রামের দুই প্রবাসী সাইফুল্লাহ ও কেফায়েত উল্লাহ গত তিনমাস আগে প্রবাসে যাওয়ার প্রক্কালে উপজেলা সদরের তাদের তিন শতাংশ জায়গা খারিজ খতিয়ান (খতিয়ান নং-৫১৪১) করতে ভূমি অফিসে যান। তখন ভূমি অফিসে পূর্বে থেকে থাকা দলিল লেখক রোমান আহমেদ সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে খারিজ খতিয়ান করে দিতে পারবে বলে জানান।

এই কাজটি করতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নগদ ১২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে রোমান দাবি করেন। প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়া সময় সন্নিকটে হওয়ায় যাওয়ার প্রাক্কালে কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন বলে রোমানকে ১২হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা দেওয়ার এক সপ্তাহ পরও কাজ না হলে দলিল লেখক প্রবাসী সাইফুল্লাহকে বলেন এসিল্যান্ডকে আরও ৬ হাজার টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন।

আর কোনো উপায় না দেখে দলিল লেখক রোমানের হাতে ৬ হাজার টাকা তুলে দিলে খারিজ খতিয়ানটি হয়ে যায়। আর দুই প্রবাসী সাইফুল্লাহ ও কেফায়েত উল্লাহ অভিযোগকারী অলিউল্লাহর আত্মীয় হওয়ায় সকল লেনদেন তার সামনেই হয়। তাই তদন্ত করে অভিযুক্ত দলিল লেখক রোমান আহমেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

ভুক্তভোগী প্রবাসী সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমার কাছ থেকে এই খারিজ খতিয়ান করতে মোট ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে দলিল লেখক রোমান আহমেদ। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সে কাজ করে দিতে পারেননি। ফলে আমার বিদেশী যাওয়ার বিমানের টিকেটও টাকা দিয়ে পিছিয়ে দিতে হয়েছে। এছাড়াও প্রবাসে ব্যবসা ক্ষেত্রে আমার অনেক লোকসান হয়েছে’।

অভিযুক্ত দলিল লেখক রোমান আহমেদ বলেন, ‘আমি নিজেও বুঝতে পারছিনা কি কারণে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি এই খারিজ করি নাই। এসিল্যান্ড সাহেব আমার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। মনে হয় এসিল্যান্ড সাহেব থেকে এফেক্টেড হয়েছেন, তাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে’।

এই বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি অফিসে গিয়ে অভিযোগটি দেখে মন্তব্য করতে পারবো’।

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল সিদ্দিক বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এসিল্যান্ড সাহেব উপজেলায় আসার পর তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

আক্তারুজ্জামান/বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর