ধোবাউড়ায় রাস্তার উপর দেয়াল নির্মাণ: অপসারনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

ময়মনসিংহ ধোবাউড়ায় উপজেলা ডাক বাংলা থেকে শুরু হয়ে ফকির বাড়ির পিছন দিক দিয়ে কলেজ রোডে মিলিত হওয়া বাইপাস রাস্তাটি দখল করে চলছে ইটের স্থাপনা নির্মাণ।

সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় পুরো রাস্তাটি দখল করে ইতোমধ্যে বাউন্ডারি নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন স্থানীয় স্বপন নামে একজন ব্যক্তি রাস্তার উপর ইট দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণ করছেন। এতে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী সাধারণ মানুষের চলাচলের একমাত্র বাইপাস রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী সহ সাধারণ মানুষ।

জানা যায়, ধোবাউড়া উত্তরপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হাই মেম্বারের নামে ধোবাউড়া মৌজায় বি.আর.এস রেকর্ডকৃত ১০ শতাংশ ভুমি আব্দুল হাই মেম্বারের মৃত্যুর পর উনার স্ত্রী বিক্রী করে দেন একই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা দুলাল সরকার (খলিফা) ও তার ভাই তপন সরকারের কাছে। বিক্রির সময় উক্ত ভুমির পাশে কোন রাস্তা ছিল না। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর মানিক স্কুল, কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে উপজেলা ডরমেটরী থেকে কলেজ রোড পর্যন্ত বাইপাস রাস্তাটি নির্মাণ করেন।

এতে উক্ত ১০ শতাংশ ভূমির প্রায় ২ শতাংশই চলে যায় রাস্তায়। এর কিছুদিন পর দুলাল সরকার ও তপন সরকার অবশিষ্ট ৮ শতাংশ ভূমি বিক্রী করে দেন। তন্মধ্যে ৫ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন রেকর্ডীয় মূল মালিকের ছেলে জহিরুল হক এবং বাকী ৩ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন ছায়াদুল বিশ্বাস নামের জনৈক স্কুল শিক্ষক। তপন সরকার ভূমি বিক্রীর নিজ হিস্যার সমূদয় টাকা পোস্ট অফিসে গচ্ছিত রেখে ভূমি রেজিস্ট্রির পূর্বেই অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। উত্তারধিকার সূত্রে তপন সরকারের সমূদয় সম্পত্তির মালিক হন তার অপর তিন ভাই দুলাল সরকার, স্বপন সরকার ও লিটন সরকার।

তপন সরকারের পোস্ট অফিসে গচ্ছিত অর্থ ৩ ভাই সমহারে ভাগ করে নিলেও তপন সরকারের বিক্রিত ভূমি রেজিস্ট্রি করে দিতে স্বপন সরকার অস্বীকৃতি জানান। এনিয়ে ভাইদের মধ্যে বিবাদ চলে। এক পর্যায়ে স্বপন সরকার জীবিকার তাগিদে ঢাকায় চলে যায়। বাধ্য হয়ে দুলাল সরকার নিজ হিস্যার ৫ শতাংশ ভূমি জহিরুলকে রেজিস্ট্রি করে দেন এবং দুলাল সরকার ও লিটন সরকার দুই ভাই ছায়াদুল বিশ্বাসকে ৩ শতাংশ ভূমি রেজিস্ট্রি করে দেন। একযুগ পরে এসে স্বপন সরকার রাস্তার ২ শতাংশ ভূমি দখল করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করেন। এতে চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়।

স্বপন সরকারের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জায়গাটি তার ছোট ভাই তপন সরকার ক্রয়কৃত সম্পত্তি, তপন সরকারের মৃত্যুর পর ২০০৯ সালে উক্ত ভূমি তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হন এবং ২০১২সালে উক্ত ভূমি তার ছেলের নামে হস্তান্তর করেন। বর্তমানে ভূমিটি তার ছেলের নামে নামজারি ও জমা খারিজকৃত। কিভাবে রাস্তা নির্মিত হয়েছে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

ধোবাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরে আলম জানান, ২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরে মানিক চেয়ারম্যান উক্ত রাস্তা নির্মাণ করেন এবং পরবর্তীতে ২০১৩ সালে আমি রাস্তাটি সংস্কার করি। তখন রাস্তা সংস্কারে কেউ বাধা সৃষ্টি করেনি।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হকের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিকুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম জানান, কোন অবস্থাতেই রাস্তা বন্ধ করতে দেয়া হবে না। আমি দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আনিসুর রহমান/বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর