সিরাজগঞ্জে বিত্তশালীদের পেটে ভূমিহীনদের ৪২ বিঘা জমি!

সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে অর্থের বিনিময়ে ধনী ব্যক্তিদের ভূমিহীন বানিয়ে খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। কেউ কেউ আবার জমি বরাদ্দ নিয়ে বিক্রিও করে দিয়েছেন। আর ভূমিহীনরা বলছেন, ঘুষ দিয়েও জমি পায়নি তারা।

সয়দাবাদ ইউনিয়নের বড়শিমুল, পঞ্চসোনাসহ আশপাশের মৌজায় ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৬ বিঘা খাস জমি ৯০ জনকে বরাদ্দ দেয়া হয়। যার মধ্যে ৪২ বিঘা খাসজমি বিত্তশালীদের পেটে। এদের মধ্যে আছেন পঞ্চসোনা মৌজার গোলবার শেখ ও খাস বড়শিমুলের জাহাঙ্গীর আলম। শুধু এ দুইজনই বিত্তশালী নয়, এমন আরও ৭৮ জন বরাদ্দ পেয়েছেন ওই খাস জমি।

গোলবার শেখ জানান, পূর্বের থেকেই খাস হয়েছিল। সিএসএ খাস, এসএ-তে খাস, আরএসেও খাস। সেটা আমি পেয়েছি।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকার ভূমিহীনদের জন্য এই জমি ছেড়েছিল। আমি ভূমিহীন, এই জন্য তারা আমাকে ৩৮ ডিসিমেল জমি দিয়েছে। অথচ পঞ্চসোনার হতদরিদ্র কোরবান আলী দীর্ঘদিন ধরে ৩১ শতাংশ খাস জমিতে বসবাস করে আসলেও সে বরাদ্দ পায়নি।

খাস জমি ক্রয়কারী জানান, ইকবাল ও হামিদুল সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আমাদেরকে রেজিস্ট্রারি করে দিয়েছে। এরা সরকারের কাছ থেকে ভূমিহীন হিসেবে এই জমি বরাদ্দ নিয়েছিলো। স্থানীয়রা জানান, যারা ভূমিহীন নয় তারাই পেয়েছে এ জমি। এদিকে খাসজমি বন্দোবস্ত নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে জানতে এসিল্যান্ড অফিসে গিয়ে সার্ভেয়ার সেলিম হোসেনকে পাওয়া যায়নি। জানা যায় তিনি বর্তমানে কামারখন্দ উপজেলায় কর্মরর্ত রয়েছে।

পরে ফোনে সার্ভেয়ার সেলিম হোসেনকে এ বিষয়ে বলা হলে তিনি জানান, এতে আমাদের কোন কিছু করার থাকে না। বৈঠকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনেক লোকজন থাকে। তারা যদি অনুমতি দেন তাহলেই ভূমি পেয়ে থাকেন।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা খাসজমি বন্দোবস্ত কমিটির সভাপতি ও ইউএনও আনোয়ার পারভেজ বলেন, ভূমিহীন ছাড়া অন্য কাউকে খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে, এমন তথ্য তাঁর জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি উল্লেখ্য করেন।

এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী বলেন, আমাদের কাছে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তাহলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তদন্তে যারাই দায়ী হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তে অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ভূমিহীনদের।

মালেক/বার্তাবাজার/ই.এইচ.এম