কিট-জনবল থাকা সত্ত্বেও ৩ মাস ধরে করোনা টেস্ট নেই

ভাটির জনপদ খ্যাত সুনামগঞ্জের হাওর পরিবেষ্টিত উপজেলা তাহিরপুরে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ৫ মে। আক্রান্তদের মধ্যে ছিল ঢাকা ও গাজীপুর ফেরত ৩ পুরুষ এবং ৩ নারী গার্মেন্টস কর্মী।

করোনা রোগী শনাক্তের খবর পেয়ে প্রথমে ভড়কে গেলেও এ অঞ্চলের লোকজন এখন আর মানতেই প্রস্তুত নই, মহামারী করোনা বলে কিছু আছে! উপজেলা ভিত্তিক কোভিড-১৯ রিপোর্টেও তাহিরপুর উপজেলার প্রাপ্ত রিপোর্ট তাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা সংগ্রহের পর্যাপ্ত কিট, জনবল থাকা সত্তেও গত ৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে সন্দেহভাজন কোন করোনা রোগী তার নমুনা দিতে আগ্রহ দেখায়নি।

অবশ্য প্রথমদিকে করানো রোগী শনাক্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ভীতসন্ত্রস্ত লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নমুনা টেস্ট দিলে বাড়তে থাকে করোনা রোগীর শনাক্তের সংখ্যা। শনাক্তদের আইসোলেশেন রাখাসহ সারা দেশের ন্যায় তাহিরপুরে আক্রান্ত বা করোনা উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে আলাদা শয্যাও প্রস্তুত করে রাখা হয়।

সর্বশেষ প্রাপ্ত (৪ মে, মঙ্গলবার) উপজেলা ভিত্তিক কোভিড-১৯ রিপোর্ট অনুযায়ী তাহিরপুরে মোট টেস্টকৃত নমুনার সংখ্যা পৌঁছে ৫৪১ জনে যার মধ্য থেকে ৫২৪ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ১জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে বাকি ৫৫ জনই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। লক্ষণীয় যে, গত ৩ মাস আগেও তাহিরপুরে কোভিড-১৯ রিপোর্টে টেস্টকৃত নমুনার সংখ্যা যা ছিল, আজও সেখানেই স্থিতিশীল রয়েছে।

এদিকে সংক্রমণ প্রতিরোধ দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিতে দেখা যায় অনেককে। এছাড়াও ভ্যাকসিন কার্যক্রম সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বাদাঘাট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সপ্তাহের রোববার টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে।

হঠাৎ দেশজুড়ে দ্বিতীয় ধাপে করোনাভাইরাস শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। দেশব্যাপী কয়েক দফায় বাড়ানো হয় লকডাউনের সময়সীমা। কিন্তু তাহিরপুরে ছিলনা লকডাউনের কোন ছাপ। মানুষের মধ্যেও আগের মত করোনা নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। নমুনা টেস্ট দিতেও কেউ আর আগ্রহবোধ দেখাচ্ছে না।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট একেএম নজরুল ইসলাম জানান, নতুন করে নমুনা টেস্ট দিতে না আসলেও করোনা টিকার প্রথম ডোজ যাদেরকে দেয়া হয়েছে চলতি মাসের ১৮ তারিখ থেকে দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু হবে।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইকবাল হোসেন জানান, গত ৩ মাস ধরে করোনার নমুনা টেস্ট শূন্যে নেমেছে তা সত্যি। টেস্টের জন্য পর্যাপ্ত কিট, জনবল ও প্রচার থাকা সত্তেও লোকজন আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

এইচ এম আবির/বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর