প্রথম ডোজ বন্ধ: হাতে নেই দ্বিতীয় ডোজের ১৪ লাখ টিকা

দেশে এ পর্যন্ত অক্সফোর্ডের টিকার ১ম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪০০ জন। তাদের সবাইকেই সেই একই জেনেরিকের দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে হবে। যার ফলে প্রথম ডোজ গ্রহণ করার পর এখনো যাদের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের সময় আসেনি, তারা অনেকটা টিকা সংকটের খবরে চিন্তিত হয়ে আছেন। বিশেষ করে সামনে যদি ওই একই টিকা আর না আসে কিংবা যাঁর যাঁর নির্ধারিত সময়সীমা হিসেবে আট থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে টিকার সংস্থান না হয়, তবে তাঁরা কিভাবে দ্বিতীয় ডোজ নেবেন, তা নিয়েই কয়েক দিন ধরে চলছে নানা আলোচনা। এমন প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রথম টিকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পরিসংখ্যান হিসেব করে দেখা যায়, দেশে এ পর্যন্ত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকা এসেছে এক কোটি তিন লাখ ডোজ। এর মধ্যে রবিবার পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে দেওয়া শেষ হয়েছে ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৬ ডোজ। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ জন। অর্থাৎ সকাল থেকে হাতে আছে ২১ লাখ ২৪ হাজার ৭৩৪ ডোজ। অন্যদিকে দ্বিতীয় ডোজ পাওনা রয়েছে ৩৫ লাখ ২১ হাজার ৫৩৪ জন মানুষের। ঘাটতি থাকবে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০০ টিকা। অন্যদিকে দিনে গড়ে দুই লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দিলে আর ১০ দিন চলবে হাতে থাকা টিকার মজুদ দিয়ে। তবে ১০ দিনের মধ্যে যদি অক্সফোর্ডের টিকা না আসে সে ক্ষেত্রে বাকি যাঁরা প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের কী হবে সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম কিছুটা আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন।

তিনি জানান, ভারত থেকে আরো ২০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ডের টিকা শিগগির আসবে। পাশাপাশি আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই চীন সরকারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ডোজ এবং কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের এক লাখ ডোজ টিকা আসবে।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেকটি সূত্র জানায়, চীন সরকার বাংলাদেশকে যে টিকা দেবে সেগুলো বাংলাদেশে বসবাসকারী চীনা নাগরিকরা প্রাধান্য পাবেন, তার পরে সেখান থেকে যা উদ্বৃত্ত থাকবে সেগুলো বাংলাদেশের মানুষের জন্য ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।

ওই সূত্র আরো জানায়, ভারতের সেরাম থেকে দেশীয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে অক্সফোর্ডের ২০ লাখ ডোজ টিকা আগামী সপ্তাহেই আসবে, নাকি আরো পরে আসবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাব্বুর রেজা বলেন, ‘সেরাম আমাদের জন্য আরো কিছু টিকা প্রস্তুত করে রেখেছে। কিন্তু সে দেশের সরকারের কিছু বিধি-নিষেধের কারণে তারা সেগুলো পাঠাতে পারছে না। ঠিক কবে নাগাদ আরো কিছু টিকা আসবে, তা আমরা এই মুহূর্তে নিশ্চিত নই।’

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (টিকা কার্যক্রম) ডা. শামসুল হক বলেন, ‘অক্সফোর্ডের টিকার সঙ্গে রাশিয়ার স্পুিনক টিকার অনেকটাই মিল আছে। চাইলে অক্সফোর্ডের টিকার পরিবর্তে সেটি দিয়েও দ্বিতীয় ডোজ চালানো যায়। তবে এখনই আমরা তা নিয়ে ভাবছি না। অক্সফোর্ডের টিকা দিয়েই আমরা দ্বিতীয় ডোজ শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য, যদিও ওই টিকা কবে আসবে, তা আমরা জানি না।’

চীনের টিকার ব্যাপারে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘চীন সরকার যে টিকা দেবে, তা বাংলাদেশের মানুষের জন্য উপহার হিসেবে দিচ্ছে, তাদের নাগরিকদের জন্য আলাদা করেই তারা টিকা পাঠাবে।’

বার্তাবাজার/ভিএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর