লামায় লকডাউনে বেকায়দায় মোটরযান চালক ও ব্যবসায়ীরা

বান্দরবানের লামা উপজেলায় দ্বিতীয় দফা লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সচেতনমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় উলেখযোগ্য ভূমিকা থাকলেও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন দোকানদার, ভাড়ায় চালিত মটর বাইক, টমটম, সিএনজি, রিক্সা চালক ও দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ।

উপজেলা প্রশাসন তেমন তৎপর না হলেও লামা থানা পুলিশের সক্রিয় ফোর্স সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জনগণকে ঘরে ফেরাতে নির্লস ভাবে কাজ করে চলেছে। একই সাথে জনসচেতনমূলক কর্মসূচিও পরিচালনা করেছেন। তবে বিগত লকডাউনের ক্ষতি না কাটতেই ২য় দফায় লকডাউন মানতে নারাজ সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়িরা।

একাধিক ব্যাবসায়ীরা বলেন গত বছরে কোন বেচাকেনা করতে পারিনি এবারো ঈদের আগে এমন হলে আমাদের পথে বসতে হবে। একই সাথে ঘোষিত লকডাউনে বেকায়দায় পড়েছে ভাড়ায় চালিত মোটর বাইক, টমটম, মিনি টমটম, সিএনজি-মাহিন্দ্রা সহ রিক্সা চালকরা।

ভাড়ায় চালিত মোটরবাইক চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল লামা উপজেলায় শতশত যুবক বেকারত্ব দূরিকরণে মোটর বাইক নিয়ে যাত্রীসেবা শুরু করে। এই উপজেলার মানুষদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠে এ বাহনটি। কিন্তু বর্তমান করোনা সংক্রমণ রোধে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সংসারের হাল ধরা ৩শতাধিক মোটরবাইক চালক যুবকরা বেকায়দায় রয়েছে এবং অনেকেই নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে।

এদিকে টমটম, মিনি টমটম, সিএনজি ও মাহিন্দ্রা চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায় চলমান জীবন যুদ্ধের কাহিনী, তারা বলেন করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের বিধি-নিষেধ মানতে গিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জানা যায়, অনেকই এনজিও থেকে লোন নিয়ে গাড়ী কিনেছে। আবার অনেকের বাড়িতে অসুস্থ মা, ছোট ভাই, ছেলে মেয়ে আছে। এছাড়া ভ্যান ও রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শতাধিক মানুষ। এই ধরনের মানুষ বেশীর ভাগ তাদের দৈনন্দিন

রোজগার দিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। কিন্তু লকডাউন এর কারণে তা এখন ভেস্তে গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনেকেই বলেন, গত লকডাউনে ত্রাণ বিতরণের বন্যা বইলেও এই লকডাউনে জনপ্রতিনিধিরা করোনার দোহায় দিয়ে হোম কোয়ারান্টাইনে আছেন। তাই পুলিশ জেল জরিমানা যতই করুক না কেন গাড়ী চালাতে হবে। না হয় খাবো কি, খাবার দেবে কে?

এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, সম্প্রতি (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। অনুরূপভাবে লামা উপজেলায় টানা এক সাপ্তাহ লকডাউন বাস্তবায়নে যথেষ্ট তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন পয়েন্টে টহল সহ জনসচেতন মূলক প্রচার ও প্রচারণা রয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে আমরা কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছি এবং তা বাস্তবায়ন হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, লকডাউনে রাস্তায় বের হওয়া গাড়ি গুলো থামিয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। নির্দেশ না মানা যানবাহন আটক করা হচ্ছে। যেসব পেশার মানুষ জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের অনুমতি দিয়ে অন্যদের বাড়ী ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এম. মিজানুর রহমান/বার্তাবাজার/ভিএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর