পিসিআর মেশিন ও আধুনিক গবেষণা সরঞ্জামাদি পেলো জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দুটি পিসিআর মেশিনসহ প্রায় ৩ কোটি টাকার গবেষণা সরঞ্জামাদি এসে পৌঁছেছে। দক্ষিণ এশিয়া তথা এশিয়া মহাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইন্সট্রুমেন্টাল একসেস এওয়ার্ড-২০২০ পাওয়ায় সিডিং ল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নের জন্য দুটি পিসিআর মেশিন ও প্রায় ৩ কোটি টাকার উচ্চমান সম্পন্ন ল্যাব সরঞ্জাম পাঠিয়েছে।

রোববার (১৮ এপ্রিল) এসব যন্ত্রপাতি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল। এওয়ার্ড ঘোষণার প্রায় ১১ মাস পর আজ সকালে আমেরিকার বোস্টোন থেকে এসব ল্যাব সামগ্রী ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইনস্ট্রুমেন্টাল একসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২০ পায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ। বাংলাদেশ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। গতবছর ২৭ মে সিডিং ল্যাবের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ এওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ বিজ্ঞানীদের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য স্বল্প খরচে উন্নত মানের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

এ ব্যাপারে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান ড. দিলারা ইসলাম শরীফ বলেন, “গত বছর বিশ্বের ১০টি দেশের মোট ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় এই অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এওয়ার্ডটা পেয়েছি। যে গবেষণা সরঞ্জাম আমরা পেয়েছি, এতে করে একটি উচ্চ মানসম্পন্ন ল্যাব তৈরি করতে পারবো। যা বায়োটেকনোলজিক্যাল গবেষণার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ২ টি পিসিআর মেশিন, ল্যামিনার ফ্লো, মাইনাস ২০ ডিগ্রি ফ্রিজসহ প্রায় ৯৪ টি উচ্চতর গবেষণা ইকুয়েপমেন্ট।”

গবেষণা ও শিক্ষার্থীদের জন্য এই সামগ্রীগুলো কতটা মাত্রা যোগ করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের ডিপার্টমেন্ট ৪ বছর হলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতো অল্প সময়ে একটা বিভাগকে সম্পূর্ণ গুছিয়ে নেওয়া যায় না। আমরা যেটা হাতে কলমে শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারছিলাম না সেটা সম্ভব হবে৷ এছাড়াও আমাদের গবেষণার পরিবেশটা সম্প্রসারণ হবে। ইউজিসি ও দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গবেষণার বিভিন্ন খাত থাকে, আমরা সেই গবেষণাগুলো নিয়মিতভাবে করতে পারবো।”

এসব পিসিআর মেশিনে করোনা টেস্ট করা যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “করোনা টেস্ট এর জন্য যে ধরনের ইকুয়েপমেন্ট দরকার তার কিছু বাকি আছে। তবে করোনা টেস্ট এর জন্য যে ধরণের জীবানুমুক্তকরণ পরিবেশের ল্যাব পরিবেশ দরকার তা আমাদের নেই। সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা গেলে আমরা করতে পারব। দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র আছে। আমাদের ইচ্ছা করোনার ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গবেষণা করা, পাশাপাশি সেগুলো প্রতিরোধে কিভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করা যাবে সেটা নিয়ে কাজ করা।”

উল্লেখ্য, আমেরিকার সিডিং ল্যাব নামের একটি বেসরকারি সংগঠন এই অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। যার উদ্দেশ্য নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশের তরুণ বিজ্ঞানীদের নতুন কিছু আবিষ্কার ও গবেষণায় উৎসাহিত করা। জানা যায়, এই অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে গবেষণার যন্ত্রপাতি বিশ্বের ১০টি দেশের ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি বিভাগে সরবরাহ করবে। এছাড়া যারা মনোনীত হয় তাদেরকে বিশ্বব্যাপী সিডিং ল্যাবের অন্য বিজ্ঞানীদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ থাকবে।

বার্তাবাজার/ভিএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর