‘জীবিত’ হতে চান সহিদা বেগম!

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে প্রায় ১২ বছর আগে গত হওয়া স্বামীর অবসর ভাতায় জীবন চলছিল সহিদা বেগমের (৪৮)। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের তৈরিকৃত তালিকায় সহিদা বেগমকে ঘোষণা করা হয় মৃত বলে। যার ফলে ১৪ মাস ধরে তিনি স্বামীর অবসর ভাতা তুলেতে পারছেন না।

কোনো ধরনের দাপ্তরিক কাজ করতে না পেরে তিনি বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন। এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নির্বাচন কমিশনের তালিকায় থাকা মৃত অবস্থা থেকে জীবিত হতে।

জানা গেছে, চিরিরবন্দর উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারী ছিলেন সহিদা বেগমের স্বামী আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের বাসিন্দা মৃত ফজিরউদ্দি। আদতে সহদা বেগম জীবিত থাকলেও নির্বাচন কমিশন থেকে করা ভোটার তালিকায় তিনি মৃত। যার ফলে স্বামীর অবসরভাতা উত্তোলনসহ বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি। এমনকি তিনি ভোট দিতেও পারছেন না। সহিদা বেগমের একমাত্র ছেলে সহিদুল ইসলাম ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। সহিদুল ইসলামের স্ত্রী, ছেলে ও মাকে নিয়ে চার সদস্যের পরিবার।

এ বিষয়ে সহিদা বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন প্রায় একযুগ আগে। তার মৃত্যুর পর আমি অবসর ভাতা গ্রহণ করে কোনোভাবে সংসার চালাতাম। আগে পাস বইয়ের মাধ্যমে টাকা তুলতাম। গত বছরে পাস বইয়ের স্থলে ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলনের নিয়ম শুরু হয়। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে জানা যায়, আমাকে মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আইডি কার্ড অনলাইনে সাপোর্ট নিচ্ছে না এবং মৃত দেখাচ্ছে। ফলে অবসর ভাতা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হই। পরে নির্বাচন অফিসে গেলে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, পাস বই, ব্যাংকের চেকবইসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলে। নির্বাচন অফিস থেকে বিষয়টি সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি সংশোধন হয়নি। আমি জীবিত আছি, অথচ কমিশনের এমন গাফেলতির কারণে গত ১৪ মাস ধরে আমি কোনো টাকা তুলতে পারছি না।

স্থানীয় আব্দুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. ময়েনউদ্দিন শাহ্ বলেন, ওই মহিলার নাম ভোটার তালিকায় ভুলবশত কর্তন করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে জীবিত ও সুস্থ আছেন। আমি তার জীবিত থাকার একটি প্রত্যায়নপত্র দিয়েছি।

চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের জানান, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ভোটার তালিকায় ওই মহিলার নাম পুনরায় অর্ন্তভুক্ত করার জন্য ঢাকা আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর পত্র দেয়া হয়েছে। এখনও কোন রিপ্লাই আসেনি। দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়, সেই চেষ্টা করছি।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর