চুয়াডাঙ্গায় কবরী রোড থাকলেও নেই আর কবরী

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের একটি সড়কের নাম কবরী রোড। ১৯৬৯ সালে এই রোডের নাম প্রতিষ্ঠা পায়। ইচ্ছা ছিলো কবরী অন্তত একবার হলেও তার নামে নামকরণ করা সড়কটি দেখে যাবেন। সেই ইচ্ছা তার আর পূর্ণ হলো না।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৩ দিনের মাথায় শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১২ টার দিকে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

কবরীর নামে ১৯৬৯ সালে সড়কটির নামকরণ হয়। ভক্তদের ভালোবাসায় ৫২ বছর ধরে রাস্তাটি টিকে আছে। এই রাস্তায় রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি অফিস, অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দারের বাসভবন। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের বাড়িও এ সড়কে। চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান চিত্রগ্রাহক বেবী ইসলামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়।

১৯৬৯ সালে চুয়াডাঙ্গায় শুটিং হয়েছিল নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘কখগঘঙ’ সিনেমার, যার প্রধান চিত্রগ্রাহক ছিলেন বেবী ইসলাম এবং সহকারী চিত্রগ্রাহক মোরশেদ আহমেদ ওরফে তোফা মিয়া। এই দুজন সম্পর্কে ছিলেন মামাতো-ফুফাতো ভাই। কাহিনির প্রয়োজনে সিনেমাটির বড় একটি অংশের শুটিং হয়েছিল মোরশেদ আহমেদের চুয়াডাঙ্গা শহরের বাড়িতে। এই বাড়ির অবস্থান বর্তমানের কবরী রোডে। বাড়ির মালিক সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছেন। বাড়ির একটি অংশে ব্যবসায়ী আখের আলী স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ থাকেন। অপর অংশ ‘কবরী মেস’ নামে পরিচিত।

‘ক খ গ ঘ ঙ’ সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সারাহ বেগম কবরী, রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদ, রহিমা খালা ও বেবী ইসলামের স্ত্রী তন্দ্রা ইসলাম। ‘১৯৬৯ সালে যখন চুয়াডাঙ্গায় “কখগঘঙ” সিনেমার শুটিং হয়, তখন কবরী খুব জনপ্রিয় ছিলেন। সবাই দেখতে আসত। বলত, কবরী কোথায় থাকে? লোকজন দেখিয়ে দিত, ওই যে ওই বাড়িতে। রিকশাচালকেরা উৎসুক লোকজনকে নিয়ে আসতেন। শুটিংয়ের এক মাসেই এভাবে মুখে মুখে বোধ হয় রাস্তাটির নাম কবরী রোড হয়ে গেছে।

২০১৬ সালে ঢাকার একটি পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে সারাহ বেগম কবরী বলেছিলেন, ‘আমাকে বললে আমি যাব। নিজ খরচেই যাব। বেঁচে থাকতে রাস্তাটি দেখে যেতে চাই। কিন্তু সেই ইচ্ছা তার আর পূরণ হলো না।

কবরী শেষ জীবনে ছিলেন, চলচ্চিত্র পরিচালক ও রাজনীতিবিদ। তিনি বিংশ শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকের বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান শেষে শনিবার (১৭ এপ্রিল) বাদ জোহর বনানীর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বার্তাবাজার/পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর