নারায়ণগঞ্জ হেফাজতের জেলা সেক্রেটারি গ্রেপ্তার

হরতালের সময় নাশকতা ও সহিংসতার অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলায় হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সেক্রেটারি মুফতি বশির উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাত ১১টায় সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সানারপাড় লন্ডন মার্কেট এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে হেফাজতের এই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, গ্রেফতারকৃত হেফাজত নেতা মুফতি বশির উল্লাহ ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের হরতাল কর্মসূচিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা সৃষ্টির ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এর যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পুলিশের কাছে রয়েছে। যে কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁও উপজেলায় মামুনুল হক ইস্যুতে ব্যাপক ভাঙচুর ও সহিংসতা চালানোসহ ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে মহাসড়কে ব্যাপক তাণ্ডবে অংশ নেওয়া নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা পুলিশ প্রশাসনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে একের পর এক সেই ঘটনার ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। আর তাতেই শনাক্ত হচ্ছেন সেই বর্বর ঘটনায় জড়িতরা। হাতে লাঠি, রড, ইটপাটকেল নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা, যানবাহন ভাঙচুরকারীদের এখন আশপাশের লোকজনও চিহ্নিত করতে পারছে।

নারায়ণগঞ্জে বিগত কয়েক বছরে অনেক ঘটনা ঘটলেও এবারই প্রথম পুলিশ প্রশাসন নাশকতাকারীদের সহজেই চিহ্নিত করতে ছবি প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া সন্দেহভাজন নেতাদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করেও তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। নজরদারিতে রাখা হচ্ছে তাদের ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট ও কার্যক্রম বলেও জানান তিনি।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, হেফাজতের হরতালে সহিংসতার ঘটনায় ৩ হাজার ৭০০ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মোট ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭৯ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে সোনারগাঁয়ে ৫১ জন, সিদ্ধিরগঞ্জে ২২ জন ও রূপগঞ্জে ৬ জন।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, সোনারগাঁয়ে ভাঙচুর, হরতালে নাশকতা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আসামিদের ফেসবুকের পোস্ট, ভিডিও ফুটেজ ছাড়াও তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব মামলায় অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং তাদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা রয়েছেন।

জেলা পুলিশ সুপার আরও বলেন, অপরাধীদের কাউকেই পুলিশ ছাড় দিবে না। হেফাজতের সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা সকল মামলার আসামিদের পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রতিদিনই গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বার্তাবাজার/ই.এইচ.এম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর